বাসস
  ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০:১১

নড়াইলে অসময়ে তরমুজ চাষে কৃষকের ভাগ্যবদল

ছবি: বাসস

সুলতান মাহমুদ

নড়াইল, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : জেলায় অসময়ে (অফ সিজনে) তরমুজ চাষে কৃষকদের ভাগ্য বদলে যাচ্ছে। মাছের ঘেরপাড়ে বাঁশের খুঁটি ও জালের ব্যাগে ঝুলছে সুস্বাদু রসালো তরমুজ ফল। 

স্থানীয়রা প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘেরপাড়ে ভিড় করছেন। কেউ ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও বানাচ্ছেন, কেউ কিনে নিচ্ছেন কেজিপ্রতি ৮০ থেকে ১০০ টাকায়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, চলতি বছর নড়াইল জেলায় মোট ২৩ হেক্টর জমিতে অসময়ের তরমুজ চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১০ হেক্টর, লোহাগড়ায় ২ হেক্টর ও কালিয়া উপজেলায় ১১ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শ, বীজ, সার ও প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহের কারণে কৃষকরা লাভজনকভাবে এ চাষে সফল হয়েছেন। কৃষকরা বলছেন, খরচের তুলনায় লাভ বেশি হওয়ায় আগামী বছরে আরও বড় পরিসরে চাষ করবেন।

সদর উপজেলার বিছালী ইউনিয়নের মির্জাপুর মাঠের কৃষক আকিনুর মল্লিক জানান, ‘আমি প্রথমবার ৩৩ শতক জমিতে ২০০ চারা রোপণ করেছি। কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও সরবরাহিত উপকরণের কারণে তরমুজ চাষে সফল হয়েছি। আমাদের উৎপাদিত তরমুজ বাজারে তুলতে হয় না, ঘেরপাড় থেকেই কেজিপ্রতি ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগামী বছর আরও বড় পরিসরে চাষ করবো।’

অসময়ে তরমুজ চাষ হওয়ায় মির্জাপুরের মাছের ঘের যেন একটি স্বপ্নের বাগান হয়ে উঠেছে। স্থানীয়রা প্রতিদিন ঝুলন্ত তরমুজ দেখতে ভিড় করছেন, ছবি ও ভিডিও বানাচ্ছেন। স্থানীয় বাসিন্দা জাকির হোসেন বলেন, ‘আকিনুরের তরমুজ চাষ দেখে আমরা অনুপ্রাণিত হয়েছি। কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে আমি আগামী বছর আমার ঘেরেও তরমুজ চাষ করবো।’

কালিয়া উপজেলার বাঐশোনা গ্রামে অসময়ে তরমুজ চাষের প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সুমন সরকার জানান, ‘আমরা কৃষকদের আগ্রহী করে তুলছি। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে থেকে সার্বক্ষণিক সহায়তা করছেন। কৃষকেরা চাইলে আমরা বীজ, সার ও চাষের পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছি।’

নড়াইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ উপ-পরিচালক মুহাম্মদ আরিফুর রহমান বলেন, ‘দিন-দিন অসময়ে তরমুজের আবাদ বাড়ছে। জেলায় এ বছর ২৩ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। আমরা চাষিদের সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছি। আশা করছি, আগামী বছর এ চাষ আরও বাড়বে। অসময়ে তরমুজ চাষ কৃষকদের আয় বাড়ানোর পাশাপাশি স্থানীয় অর্থনীতিতেও বড় ভূমিকা রাখছে।’

কৃষি কর্মকর্তারা আশা করছেন, আগামী বছর নড়াইলের বিভিন্ন এলাকায় এই চাষ দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে। তারা বলছেন, সঠিক প্রযুক্তি ও কৃষি সহায়তা থাকলে অসময়ে তরমুজ চাষে কৃষকের লাভ আরও বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া, স্থানীয় বাজারে সরাসরি বিক্রির মাধ্যমে মধ্যস্বত্বভোগীদের মধ্যস্থতা কমে কৃষকের আয় বাড়ছে।