শিরোনাম
বিপুল ইসলাম
লালমনিরহাট, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস): আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসবকে ঘিরে লালমনিরহাট জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে উৎসবের আমেজ। শহর থেকে গ্রামাঞ্চল সবখানেই পূজার প্রস্তুতির তোড়জোড় শুরু হয়েছে। পূজাকে ঘিরে জেলা শহর ও উপজেলা পর্যায়ের বিপণিবিতান ও মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
জানা গেছে, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে সমাপ্ত হবে। এ উৎসবকে সামনে রেখে প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে।
সরেজমিনে জেলা শহরের বিভিন্ন মার্কেটে দেখা গেছে, নারীদের শাড়ি, থ্রি-পিস, ওয়ান-পিস, শিশুদের পোশাক, পুরুষদের শার্ট, প্যান্ট ও পাঞ্জাবির দোকানগুলো ক্রেতাদের ভিড়। এছাড়া কসমেটিকস, গহনা এবং ঘর সাজানোর সামগ্রী কেনাকাটায় ব্যস্ত নারীরা।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, সিজন্যাল ডিসকাউন্ট ও ক্যাশব্যাক সুবিধার কারণে বিক্রি বেড়েছে। শহরের শাহান শপিং কমপ্লেক্স, পাটোয়ারী শপিং কমপ্লেক্স, পৌর শপিং কমপ্লেক্স, ফ্যাশন পার্ক, চয়েস ফ্যাশন, জেলা পরিষদ সুপার মার্কেট, একতা বস্ত্রালয়, সিটি গার্মেন্টস, আড়ং ফেব্রিক্স ও দুলাল গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন বিপণিবিতানে ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। একইসঙ্গে দর্জির দোকানগুলোতেও ব্যস্ততা বেড়েছে।
পরিবারের জন্য কেনাকাটা করতে আসা অনন্যা চক্রবর্তী বলেন, বাবার জন্য শার্ট-প্যান্ট ২ হাজার টাকায়, দাদুর জন্য ৮০০ টাকায় ফতুয়া কিনেছি। মায়ের জন্য শাড়ি ও বোনের জন্য পোশাক কিনতে প্রায় সাড়ে চার হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় দাম কিছুটা বেশি।
নরসিংদী বস্ত্রালয়ের বিক্রেতা তহুল ইসলাম জানান, এ বছর ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী পোশাক আনা হয়েছে ফলে বিক্রি ভালো হচ্ছে।
কাজী ফ্যাশনের বিক্রয়কর্মীরা জানান, সন্ধ্যার পর ক্রেতাদের ভিড় আরও বেড়ে যায়।
প্রশাসনের প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, এ বছর লালমনিরহাট জেলায় মোট ৪৬৮টি পূজামণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা
অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১৬২টি, আদিতমারীতে ১১৪টি, কালীগঞ্জে ৯১টি, হাতীবান্ধায় ৭২টি এবং পাটগ্রামে ২৯টি মণ্ডপে পূজার আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপনে জেলা প্রশাসন একাধিক মতবিনিময় সভা করেছে। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারাও পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করছেন।
বড়বাড়ী বাজার শিবকালী ও দুর্গা মন্দিরের সভাপতি নিমাই চন্দ্র পাল বলেন, প্রশাসনের সহযোগিতায় আনন্দঘন পরিবেশে পূজার প্রস্তুতি চলছে।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের অন্যতম সমন্বয়কারী হীরালাল রায় জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের জেলা সভাপতি গুরুচরণ রায় আশা প্রকাশ করে বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও শান্তিপূর্ণভাবে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে।
জেলা পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি মণ্ডপে পুলিশের বিশেষ নজরদারি থাকবে, পাশাপাশি গোয়েন্দা সদস্যরাও সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করবেন।
এ বিষয়ে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, দুষ্কৃতকারীদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের কোনো চেষ্টাই সফল হবে না। পূজা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে আমাদের নেতাকর্মীরা একযোগে কাজ করবে।