বাসস
  ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১:৩৩

বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্তকরণ ও শুল্ক কমানো নিয়ে আলোচনা করতে আগামী সপ্তাহে ঢাকায় আসছে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিদল

বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান। ফাইল ছবি

ঢাকা, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস): আগামী সপ্তাহে ঢাকা আসছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাণিজ্য প্রতিনিধি দল। সফরকালে তারা বাংলাদেশি পণ্যের ওপর বর্তমানে আরোপিত ২০ শতাংশ শুল্ক আরও কমানো এবং সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্তের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করবে।

বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান আজ রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বাসসকে বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের রপ্তানি পণ্যের ওপর শুল্ক আরও কমানোর চেষ্টা করছি। প্রতিনিধি দলের সফরে আলোচনার মূল ফোকাস হবে বাণিজ্য চুক্তি দ্রুত চূড়ান্ত করা এবং শুল্ক হ্রাস নিশ্চিত করা।’

আগামী রোববার থেকে শুরু হতে যাওয়া বাণিজ্য আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি (ইউএসটিআর) দলের নেতৃত্ব দেবেন দেশটির দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার সহকারী ইউএসটিআর ব্রেন্ডান লিঞ্চ।

বাণিজ্য সচিব বলেন, এর আগে বাংলাদেশি প্রতিনিধি দলের যুক্তরাষ্ট্র সফরে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তখন বাংলাদেশি পণ্যে ২০ শতাংশ শুল্ক আরও কমানোর প্রস্তাব মার্কিন পক্ষের সামনে তোলা হয়েছিল।

এর আগে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশি পণ্যের উপর পারস্পরিক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে আরও কমিয়ে আনার বিষয়ে উভয় দেশের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ইউএসটিআরের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে একটি খসড়া বাণিজ্য চুক্তি প্রস্তুত করা হয়েছে। আসন্ন বৈঠকে অগ্রগতি হলে প্রয়োজনীয় সংশোধন এনে এটি চূড়ান্ত করা হবে।

গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি পণ্যের ওপর শুল্কহার ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করেছে। ওয়াশিংটনে চূড়ান্ত রাউন্ড আলোচনার পর হোয়াইট হাউস এ ঘোষণা দেয়। তবে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো চুক্তি স্বাক্ষর হয়নি।

সফরকালে ইউএসটিআর দল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়ামের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

শিল্প সংশ্লিষ্টদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ এবং চীনের ওপর ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় তৈরি পোশাক খাতে বাংলাদেশ বড় সুবিধা পাচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশের শুল্কহার ২০ শতাংশ হওয়ায় আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিকল্প সরবরাহ কেন্দ্র হিসেবে দেশের অবস্থান আরও শক্ত হচ্ছে।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের  সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন সম্প্রতি বলেছেন, এই শুল্ক সুবিধার কারণে বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা ভারত ও চীন থেকে সরে যাওয়া প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত অর্ডার পেতে পারেন।