বাসস
  ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০:৪৫

পল্লী বিদ্যুৎ কর্মচারীদের কাজে ফেরার নির্দেশ, অনিয়ম তদন্তে কমিটি গঠন

ঢাকা, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস): পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মচারীদের আইন বহির্ভূত কার্যকলাপ থেকে বিরত থেকে অবিলম্বে কাজে যোগদানের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। 

অন্যথায় বিদ্যুতের মতো জরুরি খাতে কর্মরত কর্মচারীদের গণছুটির আবেদন গ্রহণপূর্বক তা স্থায়ী ছুটিতে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে আজ বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বাপবিবো) ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (পবিস)-এর মধ্যে চলমান অসন্তোষ নিরসনে সরকার একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নেতৃত্বে বাপবিবোর কাঠামো পর্যালোচনার জন্য গঠিত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর, বিদ্যুৎ বিভাগ ২৪ জুন দুটি পৃথক কমিটি গঠন করে পর্যালোচনার কাজ শুরু করে। ইতোমধ্যে উভয় কমিটি তাদের প্রাথমিক প্রতিবেদন দাখিল করেছে।

প্রতিবেদন পর্যালোচনার পর বাপবিবোকে পবিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলি পুনর্বিবেচনার নির্দেশ দেওয়া হয়। সাময়িক বরখাস্ত এবং অন্যান্য প্রশাসনিক সিদ্ধান্তগুলোতেও সহানুভূতিশীল মনোভাব প্রদর্শনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এসব কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

এরপরও ৭ সেপ্টেম্বর থেকে একশ্রেণির কর্মচারী তথাকথিত ‘গণছুটি’র নামে কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি এবং অন্যান্য আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। সরকার সহনশীলতা প্রদর্শন করে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কাজে যোগদানের জন্য নির্দেশ দেয়।

সরকারি নির্দেশনার পর অনেক কর্মচারী ছুটি প্রত্যাহার করে কাজে যোগ দিয়েছেন। তবে কেউ কেউ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় যোগ দিতে পারেননি বলে জানা যায়। সরকার জানিয়েছে, পবিসের যৌক্তিক দাবি-দাওয়া ধাপে ধাপে বিবেচনা করা হবে। সাময়িক বরখাস্তকৃত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যদি লিখিতভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ডে না জড়ানোর অঙ্গীকার করেন, তবে তাদের বরখাস্তের আদেশ পুনর্বিবেচনা করা হবে।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অন্যতম দাবি ছিল বাপবিবোর ক্রয় কার্যক্রমে দুর্নীতি ও অনিয়মের তদন্ত। এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার একজন সাবেক সচিবের নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে। এই কমিটি গত পাঁচ বছরে বাপবিবোর ক্রয় কার্যক্রম যেমন ক্রয় পরিকল্পনা, প্রাক্কলিত মূল্য, দরপত্র পদ্ধতি, পণ্য ও সরঞ্জামের স্পেসিফিকেশন পিপিআর-২০০৮ অনুযায়ী হয়েছে কি না তা যাচাই করে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে।

এ ছাড়া, পবিসের ভবিষ্যৎ কাঠামো নির্ধারণের জন্য ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটির সুপারিশ, আইন সংশোধন, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার মতামত এবং আর্থিক বিষয়াদি বিবেচনা করে দীর্ঘমেয়াদী সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া চালু রয়েছে। একই সঙ্গে ১৯৯২ সালের (সংশোধিত ২০১২) ‘পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কর্মচারী চাকরি বিধি’ হালনাগাদ করা হবে, যাতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশাসনিক ও আর্থিক যৌক্তিক দাবি পূরণ সহজ হয়।