শিরোনাম
ঢাকা, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মাহবুবা ফারজানা বলেছেন, নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়নের পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ে বিরোধ নিষ্পত্তিতে গ্রাম আদালত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
তিনি বলেন, গ্রাম আদালত প্রতিষ্ঠার জন্য স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় যে তৃতীয় ধাপের কার্যক্রম শুরু করেছে, সেটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উদ্যোগ। এই উদ্যোগে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্ভব সব ধরনের সহযোগিতা করবে।
সচিবালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগে বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ ৩য় পর্যায় প্রকল্পের আওতায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে অনুষ্ঠিত পরামর্শমূলক সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তথ্য সচিব আজ সোমবার এসব কথা বলেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকসুদ জাহেদী। তিনি বলেন, ‘সরকারের কাজ জনগণের সেবা করা। ইউএনডিপি এই প্রকল্পের মাধ্যমে মূলত সরকারকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করছে। তবে এটি আমাদের নিজেদেরই কাজ। এখানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় যুক্ত রয়েছে, আমরা পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করব। ’
সভায় জানানো হয়, বাংলাদেশ সরকার, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউএনডিপির সহায়তায় বাস্তবায়িত এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য গ্রামীণ জনগণ, বিশেষ করে নারী, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকারের সুযোগ বৃদ্ধি করা। এসডিজি-১৬.৩ এবং ৫ বাস্তবায়নে গ্রাম আদালতের কার্যকর ভূমিকার রয়েছে। এটি গ্রামীণ জনগণের জন্য সহজ, দ্রুত ও কম খরচে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার পাশাপাশি আনুষ্ঠানিক আদালতের মামলার জটও কমাতেও সহায়তা করছে।
সভায় জানানো হয়, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত গ্রাম আদালতে ১ লাখ ১৫ হাজার ৩৬৭টি মামলা দায়ের হয়েছে। এরমধ্যে নারী আবেদনকারী ৩০ হাজার ৮৭৩ জন। বিচার প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী নারী ১৫ শতাংশ। মামলা নিষ্পত্তির হার ৭৫ দশমিক ৪১ শতাংশ। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ৮৯ দশমিক ৫১ শতাংশ। এসব মামলায় ক্ষতিপূরণ আদায় হয়েছে ১২৭ কোটি ৪৬ লাখ ৪১ হাজার ৬৫৯ টাকা। গ্রাম আদালতের মাধ্যমে ১০ লাখেরও বেশি মানুষকে সচেতন করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চলের তিন জেলা ব্যতীত সারা দেশে এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পে মোট বিনিয়োগের এক-তৃতীয়াংশ বহন করছে বাংলাদেশ সরকার ।
গ্রামীণ জনগণের মধ্যে গ্রাম আদালতের সেবাসমূহ দ্রুত ও কার্যকরভাবে পৌঁছে দিতে প্রকল্পে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সহযোগিতা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ জন্য জাতীয় পর্যায়ে গণযোগাযোগ অধিদপ্তর, তথ্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা, জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ এবং কমিউনিটি রেডিওগুলোর সহায়তা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে তথ্য কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে প্রচারণা কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে বলে সভায় জানানো হয়।
গ্রামীণ জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, সংখ্যালঘু, নারী, দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগণের মাঝে গ্রাম আদালত বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। সরকারি ওয়েব পোর্টাল ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করেও এই প্রচারণা জোরদার করা হবে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. কাউসার আহাম্মদ, অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রচার) ড. মোহাম্মদ আলতাফ-উল-আলম, প্রধান তথ্য অফিসার মো. নিজামূল কবীর, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব মোর্শেদ, বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) মহাপরিচালক মো. মাহবুবুল আলম সভায় উপস্থিত ছিলেন।