শিরোনাম
।। বাবুল আখতার রানা।।
নওগাঁ, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : নওগাঁ জেলায় এবার বোরো ও আমন চাষের মধ্যবর্তী সময়ে অনেক জমিতে আউশ ধান চাষ করে লাভবান হয়েছেন কৃষকেরা। বোরো কাটার পর তারা আউশ ধান চাষ করেন। এখন আউশ ধান কেটে সেই জমিতে আমন মৌসুমের সুগন্ধযুক্ত চিনি আতপ (চিনি গুড়া) ধান চাষ করার প্রস্ততি চলছে।
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলায় চলতি মৌসুমে কৃষকেরা ৫৮ হাজার ৬৯৫ হেক্টর জমিতে আউশ ধানের চাষ করেছেন। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪৫ হেক্টর বেশি।
চলতি বছর উপজেলাভিত্তিক আউশ ধান চাষের জমির পরিমাণ, নওগাঁ সদর উপজেলায় ৪ হাজার ৩৮৫ হেক্টর, রানীনগরে ৬৮০ হেক্টর, আত্রাইয়ে ১ হাজার ৭৮৫ হেক্টর, বদলগাছিতে ২ হাজার ২২৫ হেক্টর, মহাদেবপুর উপজেলায় ১৫ হাজার ২০০ হেক্টর।
এছাড়া পত্নীতলা উপজেলায় ৬ হাজার ৭০০ হেক্টর, ধামইরহাটে ২ হাজার ৭১০ হেক্টর, সাপাহারে ৮০৫ হেক্টর, পোরশায় ৮৫০ হেক্টর, মান্দায় ১৩ হাজার ৪৫৫ হেক্টর এবং নিয়ামতপুর উপজেলায় ৯ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে।
কৃষি বিভাগের সূত্রে, চলতি বছর প্রতি হেক্টর জমি থেকে ৪.৫০ টন হিসেবে মোট ২ লাখ ৬৪ হাজার ১৩০ টন ধান উৎপাদিত হওয়ার প্রত্যাশা রয়েছে। এর থেকে চাল পাওয়া যাবে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৮৫ টন।
পত্নীতলার কৃষক সালেমামুন ও কিসমত আলী বলেন, বোরো ধান কাটার পর আমন ধান চাষ পর্যন্ত এসব জমি পতিতই থাকশ। তাই তারা মধ্যবর্তী ফসল হিসেবে আউশ ধান চাষ করেছেন। বেশ ফলন হচ্ছে। লাভও অনেক।
তারা আাী বলেন, যেহেতু বোরো ধান চাষের পর এসব জমি পড়েই থাকশ এবং আউশ ধান কাটার পর কৃষকরা যথারীতি আমন মৌসুমে চিনি আতপ ধান চাষ করেছেন। কাজেই অতিরিক্ত হিসেবে আউশ চাষ করে একদিকে যেমন তারা খাদ্যের যোগান নিশ্চিত করেছেন অন্যদিকে আর্থিকভবে লাভবান হয়েছেন।
এছাড়া অন্যান্য জেলা থেকে এবং নওগাঁ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর সংখ্যক শ্রমিক ধান কাটার কাজে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। তারা প্রতি বিঘা জমি ২৫০০ টাকা থেকে ৩০০০ টাকায় চুক্তিভিত্তিক ধান কাটার কাজ করে আয় করছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, চলতি বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হওয়ার ফলে আউশ উৎপাদনে কৃষকের সেচ খরচ খুবই কম লেগেছে। কীটনাশকের আক্রমণ তেমন ছিল না। মধ্যবর্তী ফসল হিসেবে আউশ চাষের ফলে কৃষকের ঘরে অতিরিক্ত খাদ্য সঞ্চিত হয়েছে। আবার আউশ কেটে ওই জমিতে আমন মৌসুমের সুগন্ধি চিনি আতপ ধান উৎপাদন করতে পারছেন।
তিনি বলেন, এর ফলে কৃষকরা বছরে তাদের জমিতে ৩টি ফসল উৎপাদন করতে পারছেন। ক্রমবর্ধমান খাদ্য চাহিদার বিপরীতে ফসলের বহুমুখী বিকেন্দ্রীকরণের অংশ হিসেবে আউশ ধানের চাষ বাংলাদেশে খাদ্য সংকুলানে যথেষ্ট সহায়ক হবে বলে মনে করি।