শিরোনাম
চট্টগ্রাম, ২৬ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড এলাকায় ৪ বছর আগে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ মাহাবুবা আক্তার খুনের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। দেড় লাখ টাকা চুক্তিতে ভাড়াটে খুনি দিয়ে পুত্রবধূকে হত্যার পর ডাকাতির নাটক সাজান শাশুড়ি নাজনীন বেগম। পিবিআই’র তদন্ত শেষে আটক আসামি মো. আরিফ দোষ স্বীকার করে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে উঠে এসেছে খুনের ঘটনার আদ্যোপান্ত। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তফা তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
খুনের ঘটনার নেপথ্যের কারিগর শাশুড়ি নাজনীন বেগম নিহত গৃহবধূ মাহাবুবা আক্তারের আপন খালা। নিজের বোনের মেয়েকে পুত্রবধূ করে এনেছিলেন ২০১৮ সালে।
আজ মঙ্গলবার পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রুহুল কবীর খান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোতে মামলাটি গ্রহণের পর গুরুত্ব বিবেচনা করে ব্যাপক তদন্ত শুরু হয়। গত রোববার ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী পলাতক আসামি মো. আরিফকে নগরীর আতুরার ডিপো থেকে গ্রেফতার করা হয়।
পরদিন তিনি ঘটনার পরিকল্পনার কথা স্বীকার করে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দেন।’
আসামির জবানবন্দির বরাত দিয়ে রুহুল কবীর খান জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আরিফ ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন। আসামি নাজনীন বেগম তাকে তার পুত্রবধূ মাহাবুবা আক্তারকে হত্যার জন্য প্রস্তাব দিলে সে রাজি হয়। এর বিনিময়ে নাজনীনের সঙ্গে তার দেড় লাখ টাকার চুক্তি হয়। আরিফ হত্যাকাণ্ড সম্পন্ন করতে পূর্বপরিচিত ৩ ব্যক্তিকে ভাড়া করেন। তাদের পরিকল্পনায় ২০২১ সালের ১৬ জুলাই মাহাবুবাকে নামাজরত অবস্থায় গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।
পিবিআই সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড থানার নারিকেল তলা এলাকায় ২০২১ সালের ১৬ জুলাই ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ মাহাবুবা আক্তারকে (২৪) হত্যা করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ভিকটিমের ভাই মো. মিশকাত চট্টগ্রামের ইপিজেড থানায় মামলা দায়ের করেন। খুনের ঘটনায় গত রোববার মো. আরিফ নামের একজনকে গ্রেফতার করে পিবিআই। এরপর সোমবার আদালতে হাজির করা হলে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
পিবিআই জানায়, ২০১৮ সালে আপন খালাতো ভাই মো. আব্দুল গোফরানের সঙ্গে ভিকটিম মাহাবুবা আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে মাহাবুবাকে তার স্বামী, শাশুড়ি মিলে অত্যাচার, নির্যাতন করতেন।
শাশুড়ি নাজনীন বেগম, স্বামী মো. আব্দুল গোফরান এবং গোফরানদের ভাড়াটিয়া মো. আরিফ ও অজ্ঞাতপরিচয় আসামিরা পরিকল্পিতভাবে মাহাবুবা আক্তারকে হত্যা করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর এসআই মহসীন চৌধুরী বলেন, ‘ঘটনার পরপরই আসামিরা ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য তাদের বাসায় ডাকাতি হয়েছে এবং ডাকাতরা পুত্রবধূকে হত্যা করেছে বলে প্রচার করে। গোফরানের তৃতীয় স্ত্রী হচ্ছে মাহবুবা। এর আগের দুই স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন গোফরান। গ্রেফতার আরিফ ফ্রিপোর্ট এলাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করতেন এবং
নাজনীন বেগমের বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকতেন।