বাসস
  ২৫ আগস্ট ২০২৫, ১৬:২৩
আপডেট : ২৫ আগস্ট ২০২৫, ১৬:২৭

ইসি’র শুনানিতে বাগেরহাটে সংসদীয় আসন বহাল রাখার দাবি এলাকাবাসীর

ঢাকা, ২৫ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সংসদীয় আসনের সীমানা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) শুনানিতে বাগেরহাট জেলার চারটি আসন বহাল রাখার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় প্রতিনিধিরা।

আজ সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের অডিটরিয়ামে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে এই শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এতে অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিবালয়ের সচিব উপস্থিত ছিলেন।

ইসি’র খসড়া প্রস্তাবে বাগেরহাটের চারটি আসন কমিয়ে তিনটিতে আনার উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু শুনানিতে অংশ নেওয়া স্থানীয় প্রতিনিধি, আইনজীবী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে আপত্তি জানান। 

তাদের দাবি, স্বাধীনতার পর থেকে বাগেরহাটে চারটি আসন ছিল। একটি আসন বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত অন্যায্য, অবাস্তব ও জনস্বার্থবিরোধী।

বাগেরহাট-৩ আসনের প্রতিনিধি এডভোকেট ওয়াহিদুজ্জামান দিপু বলেন, ‘দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে বাগেরহাটে চারটি আসন ছিল। হঠাৎ করে ইসি আমাদের জানিয়েছে, চারটি আসন থাকবে না। একটি আসন বাদ দেওয়া বাগেরহাটবাসী মানে না। এটা অযৌক্তিক, আইন পরিপন্থী এবং এটি বাস্তবসম্মতও নয়।’

ব্যারিস্টার শেখ মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে গঠিত নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া। অথচ তারা বাগেরহাটের জনগণের অধিকার খর্ব করছে। ইসি’র এ সিদ্ধান্ত জুলাই বিপ্লবের স্পিরিটের পরিপন্থী।’

এডভোকেট মিজানুর রহমান অভিযোগ করেন, ‘কোনো গণশুনানি না করেই আসন কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে, যা বৈষম্যমূলক। প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত না এলে আমরা আদালতে যাব।’

আগে বাগেরহাটে চারটি আসন ছিল— বাগেরহাট-১: মোল্লারহাট-ফকিরহাট-চিতলমারী, বাগেরহাট-২: সদর ও কচুয়া, বাগেরহাট-৩: রামপাল ও মোংলা, বাগেরহাট-৪: মোড়েলগঞ্জ ও শরণখোলা। 

প্রস্তাবিত নতুন বিভাজন অনুযায়ী বাগেরহাট-১ আগের মতো বহাল, বাগেরহাট-২: সদর, কচুয়া ও রামপাল এবং বাগেরহাট-৩: মোংলা, মোড়েলগঞ্জ ও শরণখোলা।

আজকের শুনানিতে সকাল ১০টা থেকে সাতক্ষীরা-৩, ৪ এবং যশোর-৩, ৬ আসনের দাবি-আপত্তি শোনা হয়।  দুপুর পর্যন্ত বাগেরহাটের আসনগুলো নিয়ে শুনানি হয়। 

দুপুর আড়াইটা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ঝালকাঠি-১, বরগুনা-১ ও ২, পিরোজপুর-১, ২, ৩, চট্টগ্রাম-৩, ৫, ৮, ১৯, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান আসনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। 

এর আগে রবিবার প্রথম দিনে কুমিল্লা অঞ্চলের ছয় জেলার ১৮টি আসনের বিষয়ে শুনানি হয়। 

ইসি জানিয়েছে, ওই দিন মোট ৮১১টি আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়, যার মধ্যে ছিল ৪২৯টি আপত্তি ও ৩৮২টি পরামর্শ।

আগামীকাল মঙ্গলবার ঢাকা অঞ্চলের শুনানি হবে। 

সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মানিকগঞ্জ, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জের কয়েকটি আসন এবং বিকালে ঢাকা জেলার বিভিন্ন আসনের দাবি-আপত্তি শোনা হবে। 

২৭ আগস্ট রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর ও সিলেট অঞ্চলের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

শুনানিতে উত্থাপিত দাবি ও আপত্তি সম্পর্কে ইসি জানিয়েছে, উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আইন ও বিধি অনুযায়ী নিরপেক্ষ সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। শুনানি শেষে রায় সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দেবে ইসির আইন শাখা।

গত ১০ আগস্ট পর্যন্ত মোট ৮৩টি আসনের সীমানা নিয়ে ১ হাজার ৭৬০টি দাবি ও আপত্তি জমা পড়ে ইসিতে। সেগুলো নিষ্পত্তি করার পরই চূড়ান্ত সীমানা প্রকাশ করা হবে।