বাসস
  ২৩ আগস্ট ২০২৫, ১২:৪৯

নড়াইলের কালিয়ায় নবগঙ্গা নদী ভাঙন বাড়ছে

বর্ষায় পানির স্রোতে জেলার কালিয়া পৌরসভার উথলীসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় নবগঙ্গা নদীর ভাঙন বেড়েছে । ছবি : বাসস

নড়াইল, ২৩ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : জেলার কালিয়া পৌরসভার উথলীসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় নবগঙ্গা নদীর ভাঙন বাড়ছে।বর্ষায় পানির স্রোতে ভাঙন বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী তীরবর্তী বসবাসকারী মানুষ চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।

প্রায় দেড় মাস  আগে থেকে শুরু হওয়া নদী ভাঙনের ফলে পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের উথলী গ্রামের পান্নু শেখ, মন্নু শেখ, নাজমুল শেখ,মুঞ্জিল শেখ ও মিঠু শেখের বসতবাড়ির পাকা-আধাপাকাসহ ঘর, খেলার মাঠ, টিউবওয়েল, বাঁশঝাড় ও গাছাপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।ঘরবাড়ি হারিয়ে নদী তীরবর্তী জায়গায় অস্থায়ী ঘর বেঁধে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বসবাস করছেন তারা ।ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে ওই গ্রামের ইউসুফ শেখ, রাকিব শেখ, আলীনূর, ইয়ানুর, বাচ্চু, সাজ্জাদ ও মিরাজের বসতবাড়ি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জরুরী বাঁধ প্রতিরোধের আওতায় বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।ভাঙনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ায় সাময়িকভাবে রক্ষা পেয়েছে বসতবাড়ি, গাছপালা, রাস্তাঘাট ও বিভিন্ন স্থাপনা। ভাঙনের তীব্রতা ও স্রোত বেশি থাকায় বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ভেসে যাওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে বলে জানান, নদীপাড়ে বসবাসকারী লোকজন।ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা মকবুল হোসেন শেখ , পান্নু শেখ , সাকিরন নেছা  ও গৃহবধু শিলা বেগম ।

সূত্রে জানা যায়, জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রতি বছর বর্ষা মওসুমে মধুমতি, নবগঙ্গা ও চিত্রা নদী ভাঙনের ফলে তীরবর্তী বসতবাড়ি, গাছপালা, বিভিন্ন স্থাপনা ও ফসলী জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। বিশেষ করে কালিয়া উপজেলার উথালী,চরমধুপুর, লোহাগড়া উপজেলার ইতনা,শালনগর, কোটাখোল, মৌলভীধানাইড়, শিয়েরবর, রামকান্তপুর, সদর উপজেলার রতডাঙ্গাসহ বিভিন্ন এলাকা নদী ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। এসব এলাকায় প্রতিবছর নদী গর্ভে বিলীন হয় ফসলী জমি, বসতভিটা, রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, নদী ভাঙন রোধে জেলার বেশ কিছু এলাকায় স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া আকস্মিক ভাবে কোন এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দিলে ভাঙন রোধে নেয়া হয় জরুরি প্রতিরোধ ব্যবস্থা।

নবগঙ্গা নদীর ভাঙন কবলিত উথালী গ্রামের বাসিন্দা পান্নু শেখ ও শিলা বেগম বলেন, নদী ভাঙন শুরুর সঙ্গে সঙ্গে সরকারিভাবে বালুর বস্তা ফেলানোর পর ভাঙন বন্ধ হয়েছে।স্থায়ীভাবে ভাঙনরোধে বাঁধ দেয়ার দাবি জানাচ্ছি। 

ভাঙন কবলিত রতডাঙ্গা গ্রামের মো. সাহাবুদ্দিন জানান, আমাদের এলাকায় চিত্রা নদীতে ভাঙন দেখা দিলে পানি উন্নয়ন বোর্ড জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন রোধে কাজ করেছে। ফলে আমার বাড়িসহ আশেপাশের বাড়িঘর ও অন্যান্য স্থাপনা নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পেয়েছে।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অভিজিৎ কুমার সাহা বলেন, প্রতি বছরই মধুমতি, নবগঙ্গা নদীসহ অন্যান্য নদীর পাড়ে ভাঙন দেখা দেয়। নদী ভাঙনের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা সরেজমিনে পরিদর্শন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগযোগ করে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করি। কাজের মান নিশ্চিত করার জন্য একটি টিম মনিটরিং করে থাকে।নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য বরাদ্দ চেয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠিয়েছি।