বাসস
  ১৩ আগস্ট ২০২৫, ১৮:৩৪

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরের ইউপি চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রী’র বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

ঢাকা, ১৩ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান মো. আজিজুল ইসলাম ও তার স্ত্রী মিসেস মায়া ইসলামের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। 

আজ দুদকের জনসংযোগ বিভাগের উপ পরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।

দুদক প্রধান কার্যালয়ের তিন সদস্য বিশিষ্ট অনুসন্ধান টিমের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০১৬ সালে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার ষোলঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার আগে থেকেই মো. আজিজুল ইসলাম ব্যবসার মাধ্যমে বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি ও বিক্রি করতেন। তার নামে ও স্ত্রীর নামে একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

তিনি আশিক গোল্ডেন পাওয়ার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০২৩-২৪ করবর্ষে মো. আজিজুল ইসলামের নামে ৩৪ কোটি ২৫ লাখ ৭৫ হাজার ২৮৮ টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদ এবং ৯ কোটি ৮৩ লাখ ৭৪ হাজার ৮০২ টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদসহ মোট ৪৪ কোটি ৯ লাখ ৫০ হাজার ৯০ টাকার সম্পদ রয়েছে। ১৯৯৯-২০০০ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত তার বৈধ আয় পাওয়া গেছে ৪২ কোটি ৮৮ লাখ ২ হাজার ৭৮৯ টাকা, অথচ ব্যয় হয়েছে ২২৭ কোটি ৪৮ লাখ ৯৭ হাজার ৩০ টাকা। সঞ্চয় হিসেবে পাওয়া যায় ৫ কোটি ৮১ লাখ ৭ হাজার ৯২৫ টাকা। ফলে তার আয়ের তুলনায় ১৭৮ কোটি ৭৯ লাখ ৮৬ হাজার ৩১৬ টাকা ব্যয় বেশি পাওয়া গেছে। ব্যাংক ঋণ বাদ দিলে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩৫ কোটি ৭৭ লাখ ৪৯ হাজার ২২ টাকা।

অপরদিকে, অনুসন্ধানে মিসেস মায়া ইসলামের নামে ২০২৩-২৪ করবর্ষে ১১ কোটি ৩১ লাখ ২২ হাজার ৪০৬ টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদ এবং ১ কোটি ২০ লাখ ২৭ হাজার ৮৮৬ টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদসহ মোট ১২ কোটি ৫১ লাখ ৫০ হাজার ২৯২ টাকার সম্পদ পাওয়া যায়। ২০০৮-২০০৯ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত তার বৈধ আয় পাওয়া গেছে ১৪ কোটি ৮ লাখ ১১ হাজার ৮৭৮ টাকা, অথচ ব্যয় হয়েছে ৪৯ কোটি ৭৯ লাখ ৩৫ হাজার ৪১৫ টাকা। সঞ্চয় হিসেবে পাওয়া যায় ৬ কোটি ৮৭ লাখ ৮৮ হাজার ৩৮৩ টাকা। তার আয়ের তুলনায় ২৮ কোটি ৮৩ লাখ ৩৫ হাজার ১৫৪ টাকা ব্যয় বেশি পাওয়া গেছে। ব্যাংক ঋণ বাদে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ১১ কোটি ৭৭ লাখ ৯ হাজার ২৯০ টাকা।

দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, আসামিরা নিজেদের, স্ত্রী-স্বামী বা সন্তানদের নামে এবং বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে অবৈধ সম্পদ অর্জন করে তা রূপান্তর, হস্তান্তর ও স্থানান্তর করেছেন, যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২), ৪(৩) ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

এ ঘটনায় দুদকের উপ-পরিচালক মো. হাফিজুল ইসলাম বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা করেন।