বাসস
  ০৮ আগস্ট ২০২৫, ১৫:০৩

ভরা মৌসুমেও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ, হতাশ বাগেরহাটের জেলেরা

ছবি: বাসস

আজাদ রুহুল আমিন

বাগেরহাট, ৮ আগস্ট ২০২৫ (বাসস): বাগেরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র কেবিতে আগে প্রতিদিন কোটি টাকার ইলিশ পাইকারি দরে বিক্রি হতো। তখন জেলেদের মুখে লেগে থাকতো স্বস্তির হাসি। কিন্তু এবার সে চিত্র পাল্টেছে। ট্রলার নিয়ে সাগরে গিয়ে জেলোর কাঙ্ক্ষিত ইলিশের সন্ধান পাচ্ছেন না। অথচ ইলিশের এখন ভরা মৌসুম। তাই হতাশায় দিন পার করছেন তারা।

কেবি বাজার মৎস্য আড়তদার সমবায় সমিতি লিমিটেডের সম্পাদক অনুপ বিশ্বাস বাসসকে জানান, কোটি টাকা দাদন দিয়েও জেলের জালে যে পরিমাণ মাছ পাওয়ার কথা, সেটি পাওয়া যাচ্ছে না। ইলিশের এই ভরা মৌসুমে আমরা অনেকটাই লোকশানের মুখে।

জানা গেছে, কেবি বাজারে ভোর সাড়ে ৫ টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত মাছ কেনাবেচা হয়। জেলার বাইরে গোপালগঞ্জ, পাবনা, ঈশ্বরদী, যশোর, রাজশাহী থেকেও ব্যবসায়ীরা এখানের বাজার থেকে মাছ কিনে ট্রাকে করে নিয়ে যান বেশি দাম পাওয়ার আশায়।

শুক্রবার সকালে এক পোন ইলিশ (৮০ পিস) বাজারে পাইকারি বিক্রি হয়েছে ৮৪ হাজার ১ শ টাকা দরে। এর মধ্যে ১ কেজি ইলিশ রয়েছে ৮ থেকে ১০টি। প্রতি কেজির দাম ১৩ শ টাকা। এছাড়া ৫ থেকে ৬ টিতে এক কেজি ধরে এমন জাটকা ইলিশ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৫ শ টাকা দরে।

পাইকারি ব্যবসায়ী মো. আজমল বাসসকে জানান, এক কেজি ইলিম বাজারে খুচরা বিক্রি হবে ১৭ শ টাকা কেজি দরে। আর ব্যবসায়ী মালেক জানান, কচুয়া ভাষা বাজারে জাটকা ইলিশ খুচরা বিক্রি হয় সাড়ে ৬ শ টাকা থেকে ৭ শ টাকা কেজি দরে। 

মহিপুর, আলিপুর, পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ইলিশের দাম একটু কম হওয়ায় বেশি দামে বিক্রি করতে পিকআপে ককসিটে ভরে ইলিশ পাঠানো হয় কেবি আড়তে। ১ কেজি থেকে দেড় কেজি ইলিশ পাইকারি বিক্রি হয়েছে ১৭ শ থেকে ১৯ শ টাকা কেজি দরে।

মাঝি ময়েন জানান, কেবি বাজারে শুক্রবার ৭ থেকে ৮ টি ট্রলার ভর্তি মাছ সাগর থেকে এসেছে। আমি যে মাছ পেয়েছি সেগুলো ৫ লাখ টাকা বিক্রি হলেও দেনা শোধ করতে পারবো না। 

ট্রলার মাঝি মো ইলিয়াস জানান, প্রতি ট্রলারে জ্বালানি তেল, বরফ , বাজার খরচ লেগে যায় আড়াই লাখ টাকা। ট্রলারে মাঝিমাল্লা মিলে স্টাফের সংখ্যা ১৮ জন। তাদের প্রত্যেককে অগ্রিম ও ঘাটে এলে বাড়ির জন্য টাকা দিতে হয়। সব মিলিয়ে তার লোকশান না হলেও এখনো লাভের মুখ দেখেননি।

তবে আড়তদার, ব্যবসায়ী, ট্রলার মাঝির প্রত্যাশা আরও দুই তিনটি ট্রিপে মাছ পাওয়া। এতে লোকশান কাটিয়ে তারা লাভের মুখ দেখতে পারবেন বলে জানান।