বাসস
  ০৬ আগস্ট ২০২৫, ১৬:৫০

বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে পাশে থাকার অঙ্গীকার নেপালের

ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা, ৬ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে ‘গণতন্ত্রের পক্ষে জনগণের সম্মিলিত ইচ্ছার ঐতিহাসিক বহিঃপ্রকাশ’ এবং ‘নতুন প্রজন্মের সৃষ্ট অনুপ্রেরণা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন নেপালের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রী পৃথ্বী সুব্বা গুরুং। রাজনৈতিক পরিবর্তনের গতি সঞ্চারে বাংলাদেশের তরুণদের ভূমিকারও প্রশংসা করেন তিনি।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত স্মরণসভায় এ কথা বলেন তিনি। 

অনুষ্ঠানটি মঙ্গলবার দূতাবাস প্রাঙ্গণে গভীর শ্রদ্ধা ও উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হয়। বুধবার ঢাকাস্থ নেপাল দুতাবাসের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে ‘গণমানুষের দ্বারা পরিচালিত আন্দোলন’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশের চলমান গণতান্ত্রিক উত্তরণে নেপালের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন গুরুং। একইসঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রশংসা করেন।

তিনি আরও বলেন, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, পর্যটন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) এবং জনগণের মধ্যে সরাসরি সংযোগসহ বহু খাতে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা ভবিষ্যতে আরো জোরদার করা দরকার। বর্তমানের দ্রুত সংযুক্ত বিশ্বে আঞ্চলিক অংশীদারত্ব আরো শক্তিশালী করার ওপরও তিনি গুরুত্ব দেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক)-এর মহাসচিব মো. গোলাম সারোয়ার। তিনি এই গণঅভ্যুত্থানকে বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এটি পুরো অঞ্চলের গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার জন্য তাৎপর্যপূর্ণ।

তিনি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য আত্মদানকারী শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং আন্দোলনের বৃহত্তর তাৎপর্যের দিকগুলো তুলে ধরেন।

নেপালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. শফিকুর রহমান নতুন প্রজন্ম, বিশেষ করে জেনারেশন জেড-এর সাহস ও দৃঢ়তার কথা স্মরণ করে বলেন, এই তরুণরাই নিপীড়নের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে কর্তৃত্ববাদী শাসনের অবসান ঘটিয়েছে।

তিনি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের গণতান্ত্রিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের প্রচেষ্টায় সকল পক্ষের সহযোগিতা কামনা করেন।

অনুষ্ঠান শুরু হয় বাংলাদেশ ও নেপালের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে। এরপর জুলাই শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া বাণীও পাঠ করা হয়।

‘জুলাই অনির্বাণ’ শিরোনামে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়, যেখানে গণআন্দোলনের পেছনের সংগ্রাম ও আকাঙ্ক্ষার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের সাবেক কূটনীতিক, দেশটির সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তা, শিক্ষাবিদ, চিকিৎসকসহ বিভিন্ন পেশাজীবী প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া সার্ক সচিবালয়, আইসিমোড, ইউনিসেফ এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও সংস্থার কর্মকর্তারাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।