বাসস
  ০৬ আগস্ট ২০২৫, ১৪:৫৮

সেতু না থাকায় কুড়িগ্রামে অর্ধলাখ মানুষের দুর্ভোগ

শফিকুল ইসলাম বেবু

কুড়িগ্রাম, ৬ আগস্ট ২০২৫ (বাসস): কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার হলহলিয়া নদীর উপর সেতু না থাকায় তিন ইউনিয়নের অর্ধলাখ মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। উপজেলা সংযোগ সড়ক হওয়ায় বাধ্য হয়ে দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের কাজাইকাটা গ্রামের বাঁশের সাকো দিয়ে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন ৩০ গ্রামের মানুষ। তাই দ্রুত একটি সেতু নির্মাণের দাবি স্থানীয়দের।  

উপজেলা প্রশাসন বলছে, সেতুর জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে চলতি অর্থবছরে কাজ শুরু হবে।

জানা গেছে, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে অনেক নেতা আসছে-গেছেন তবুও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়নি রৌমারীর দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের কাজাইকাটা গ্রামের মানুষের। একদিকে রাস্তা বেহাল, অপরদিকে সড়কে সেতু না থাকায় ৩০ গ্রামের মানুষ প্রতিদিন চলাচলে দুর্ভোগ পাহাচ্ছেন। 

সরেজমিনে দেখা যায়, সাহেবের আলগা, চরশৌলমারী ও দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের শান্তিরচর, খড়ানির চর, কাজাইকাটা, গাছ বাড়ি, চর কাজাইকাটা, আনন্দ বাজার, ফুলকার চর, সোনাপুর, গেন্দার আলগা, নামাজের চর, খেয়ারচর, ডিগ্রীরচর, বাংলা বাজার, চর ইটালুকান্দা, লাউবাড়ি, উত্তর নামাজের চর, জাহাজের আলগা, দই খাওয়ার চর, হবিগঞ্জ, ফুলকার চরসহ বিভিন্ন চরের মানুষ ওই পথে বাঁশের সাকোতে করে পারাপার হচ্ছেন। সঙ্গে জিনিসপত্র নিয়ে অনেক কষ্ট করে চলাচল করতে হচ্ছে তাদের। সাকোর উপর দিয়ে ভারি কোনো যান চলাচল করতে না পারার কারণে বৃদ্ধ, রোগী ও শিশুরা বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন। এছাড়া বেশি কৃষিপণ্যও আনা-নেওয়া করা যাচ্ছে না।  

স্থানীয় অনেকে জানান, হলহলিয়া নদীর উপর সেতু না থাকায় বছরের পর বছর ধরে চর শৌলমারী, সাহেবের আলগা এবং দাতঁভাঙ্গা ইউনিয়নের মানুষ খুব কষ্ট করে চলাচল করে আসছেন। সেতুর দাবিতে অনেক আন্দোলন করেও লাভ হয়নি। অথচ জনপ্রতিনিধিরা ভোটের আগে শুধু প্রতিশ্রুতিই দিয়ে যান। পরে আর তাদের দেখা মেলে না। 

ফলে এলাকাবাসী নিজ উদ্যোগে চারশত ফুট দৈর্ঘ্যের একটি বাঁশের সাকো নির্মাণ করে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষের চলাচল করছে এই সাকো দিয়ে। বর্ষা মৌসুমে কর্দামাক্ত পথে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হয় দারিদ্রপীড়িত এই জনপদের মানুষকে। 

উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র পথে প্রতিদিনই দুর্ঘটনার স্বীকার ও ক্ষতির মুখে পড়ছেন পথচারীরা। বেশি কষ্টে পড়তে হয় গর্ভবতী নারীসহ অসুস্থ রোগী, শিশু এবং বয়স্কদের। বর্ষা মৌসুমে এই কষ্ট আরও কয়েকগুণ বেড়ে যায়। 

অথচ সেতু ও রাস্তার সমস্যা সমাধান হলে জেলা শহরের সঙ্গে রৌমারী উপজেলার মানুষ মাত্র আড়াই থেকে তিন ঘণ্টায় যাতায়াত করতে পারবে। এতে করে সকল পেশাজীবী মানুষের সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে। পাশাপাশি গ্রামগুলোর মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সংস্কৃতিসহ আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য সেতু নির্মাণ ও রাস্তা সংস্কার জরুরী বলে করেন স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উজ্জল কুমার হালদার বলেন, কাজাইকাটা এলাকায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩ হাজার ৬৩০মিটার চেইনেজ সেতুর জন্য জেলায় একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে চলতি অর্থবছরে সেতুর কাজ শুরু হবে।