বাসস
  ২২ জুন ২০২৫, ১৪:১০

লালমনিরহাটে ছড়িয়ে পড়েছে গরুর লাম্পি স্কিন রোগ, দিশেহারা খামারিরা

ভাইরাসজনিত লাম্পি স্কিন রোগে গরুদের জ্বর হয়, শরীর ফুলে ওঠে ও ত্বকে গুটি দেখা দেয় । ছবি : বাসস

লালমনিরহাট, ২২ জুন, ২০২৫(বাসস) : জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে গরুর লাম্পি স্কিন রোগ। ভাইরাসজনিত এই রোগে কয়েকদিনে আক্রান্ত হয়েছে কয়েক হাজার গরু ও মহিষ। কোন ঔষধে কাজ না হওয়ায় মারাত্বক ক্ষতির মুখে পড়েছে ছোট বড় সব খামারিরা।

গবাদিপশুর জন্য লাম্পি স্কিন মারাত্মক সংক্রামক একটি রোগ। ছোঁয়াছে  এই রোগ খুব দ্রুত এটি এক পশু থেকে অন্যপশুতে ছড়িয়ে পড়ে। জেলায় প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত পশুর সংখ্যা। প্রাথমিকভাবে আক্রান্ত গরুদের জ্বর হয়, শরীর ফুলে ওঠে, ত্বকে গুটি দেখা দেয়, মুখ দিয়ে লালা ঝরে এবং ধীরে ধীরে পশুটি দুর্বল ও নিস্তেজ হয়ে পড়ে।এক পর্যায়ে পশুর মৃত্যু ঘটে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা নিয়মিত ক্যাম্পেইন পরিচালনা করছেন। তারা রোগের লক্ষণ, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা সংক্রান্ত সচেতনতামূলক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। চিকিৎসা পত্র নিয়েও তেমন কোন সুফল মিলছে না বলেও খামারিদের অভিযোগ। এ রোগের চিকিৎসাও অনেকটা ব্যয়বহুল হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ক্ষুদ্র খামারি ও কৃষকরা। আক্রান্ত পশুর পাশে সুস্থ্য পশু থাকলে সেখানেও দ্রুত রোগ ছড়িয়ে পড়ে তাই আক্রান্ত পশুকে দ্রুত আলাদা স্থানে রেখে চিকিৎসা করাতে হয় অনেক খামারি অবগত নয়।

লাম্পি স্কিনে আক্রাস্ত হওয়া খামারিদের দাবি, ঈদের আগে ভারতীয় সীমান্ত অতিক্রম করে আসা ভারতীয় গরুর মাধ্যমে এ রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে।

লালমনিরহাট জেলার  মধ্যে মহামারী আকার ধারণ করেছে সীমান্ত পার্শবর্তী উপজেলা পাটগ্রাম ও হাতিবান্ধার সীমান্তবর্তী গ্রামগুলো।

পাটগ্রাম এলাকার খামারি মোরশেদ আলম বলেন,‘আমার খামারে ১২টি গরু আছে। এর মধ্যে ৫টি গরু লাম্পি রোগে আক্রান্ত হয়েছে। গরুগুলোর শরীরে ফোলা দেখা যাচ্ছে, জ্বর হচ্ছে আর মুখ দিয়ে লালা পড়ছে। চিকিৎসা করাতে অনেক খরচ হচ্ছে, অথচ ওষুধও ঠিকমতো পাওয়া যাচ্ছে না।’

বড়খাতা এলাকার খামারি একরামুল বলেন,‘এই রোগে গরুরা খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেয়। ওজন কমে যায়। আমরা খুব অসহায় হয়ে পড়েছি। সরকারের কাছে অনুরোধ, যেন দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’

হাতীবান্ধা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মাহমুদুল হাসান বলেন,‘আমরা ইতোমধ্যেই মাঠ পর্যায়ে ক্যাম্পেইন শুরু করেছি। আক্রান্ত পশুদের আলাদা করে রাখা, কীভাবে পরিচর্যা করতে হবে এবং প্রাথমিক চিকিৎসার বিষয়ে খামারিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে’।

জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, জেলায় সরকারী ভাবে এ রোগের ভ্যাক্সিন আসেনি। আপাতত খামারিদের বাজারে বেসরকারী ভাবে বাজারজাত করা ভ্যাক্সিন দিতে বলা হচ্ছে। গরু আক্রান্ত হলে খামারিদের প্রথমে উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তরে যেতে বলা হচ্ছে।