বাসস
  ০১ জুন ২০২৫, ২০:২৩
আপডেট : ০১ জুন ২০২৫, ২০:৩৮

সিলেটে নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে

সিলেটে নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে। ছবি : বাসস

সিলেট, ১ জুন, ২০২৫ (বাসস) : অব্যাহত বৃষ্টি ও ভারত থেকে ঢল নামার ফলে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর চার পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা ছাড়িয়েছে। এতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে।

বন্যা পরিস্থিতিতে বানভাসি মানুষের আশ্রয়ের জন্য সিলেট জেলায় পাঁচ শতাধিক আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। 

সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ জানান, বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন তারা। জেলায় ৫৮২টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বন্যা দুর্গত মানুষের সাহায্যে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও পুনর্বাসন কেন্দ্র আজ রোববার সন্ধ্যায় জানিয়েছে, আজ রোববার সকাল ৬টার আগে সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা ছাড়িয়েছে। সন্ধ্যা ৬টায় পানি বেড়ে ৮৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় এই পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। কানাইঘাটে পাহাড়ি লোভা নদীর পানি বেড়েছে ২৪ ঘণ্টায় ৮০ সেন্টিমিটার।

সুরমার সিলেট পয়েন্টে পানি বাড়লেও বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। সন্ধ্যায় এই পয়েন্টে পানি আধা মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল সন্ধ্যা থেকে ২৪ ঘণ্টায় পানি বেড়েছে ৭৫ সেন্টিমিটার।

কুশিয়ারা নদীর পানি জকিগঞ্জ উপজেলার আমলশীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১ দশমিক ৫৮ মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই পয়েন্টে ২৪ ঘণ্টায় পানি বেড়েছে ৩ দশমিক ৪৫ মিটার। গতকাল সন্ধ্যায় বিপৎসীমার ১৮৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

কুশিয়ারার শেওলা পয়েন্টে আজ বিকেল ৩টায় বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। সন্ধ্যায় ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। ২৪ ঘণ্টায় এই পয়েন্টে আড়াই মিটার পানি বেড়েছে। কুশিয়ারার ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টায় এই পয়েন্টে এক দশমিক ৭ মিটার পানি বেড়েছে।

জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, পানি বাড়ায় সিলেটের কিছু নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তবে, পাহাড়ি নদী সারি, পিয়াইন, গোয়াইন ও ধলাইয়ের পানি কিছুটা কমেছে।

সিলেটে গত ৪৮ ঘণ্টা অব্যাহত বৃষ্টির ফলে সিলেট নগরেও জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছিল। আজ দিনের বেলা বৃষ্টি থামায় জলাবদ্ধতা কমে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা শুরু হয়েছে।

সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন বলেন, গতকাল শনিবার সকাল ৬টা থেকে আজ রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ৪০৪ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে একদিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত।

এছাড়াও মৌলভীবাজার জেলার দক্ষিণভাগে ৩৫৫ মিলিমিটার, সিলেটের বিয়ানীবাজারের শেওলায় ৩২২, মৌলভীবাজারের শেরপুরে ২৫৮ ও সিলেটের গোয়াইনঘাটের জাফলংয়ে ২১০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে।