বাসস
  ০৮ মে ২০২৫, ১৫:০৫

রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান জোরদারে ডিএমপি’র সিদ্ধান্ত

ঢাকা, ৮ মে, ২০২৫ (বাসস) : ছোটখাটো অপরাধ দমন এবং রাস্তাঘাটে অবৈধ দখলদারিত্ব উচ্ছেদের লক্ষ্যে রাজধানী জুড়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

ডিএমপির ডেপুটি কমিশনার এবং মুখপাত্র মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বাসসকে বলেন, ‘আমরা একটি বাসযোগ্য শহর গড়ে তুলতে ছোটখাটো অপরাধ দমন এবং রাস্তাঘাটে অবৈধ দখলদারিত্ব রোধে ডিএমপির অধীনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি ।’

তিনি বলেন, ডিএমপি দুই মাস আগে তার আটটি বিভাগে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান শুরু করেছে। এসব অভিযান পরিচালনার জন্য ডিএমপিতে আটজন বিশেষ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

তালেবুর রহমান বলেন, ‘ট্রাফিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে ডিএমপি সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে।’

এ প্রসঙ্গে তিনি ডিএমপি ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার জন্য চালকসহ সকলকে ট্রাফিক নিয়মকানুন মেনে চলার আহ্বান জানান।

ডিএমপির পদক্ষেপের অংশ হিসেবে, রোগী বহনকারী যানবাহনের সহজ চলাচল নিশ্চিত করতে যানজট রোধে রাস্তার অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করার জন্য ডিএমপি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ডিএমসি) এলাকায় পৃথক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) বিশেষ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ট্রাফিক লালবাগ বিভাগের তত্ত্বাবধানে ডিএমসি এলাকার দক্ষিণ গেটে অবৈধ স্থাপনা অপসারণ এবং যানজট নিরসনের লক্ষ্যে একটি সংক্ষিপ্ত বিচার আদালত পরিচালনা করে বেশ কয়েকজনকে সাজা দিয়েছেন।

ডিএমপির বিশেষ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুর রহমান গত ৬ মে ডিএমসির দক্ষিণ গেট এলাকায় বিভিন্ন যানবাহন অবৈধভাবে পার্কিংয়ের অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে সাজা দিয়েছেন।

একই দিনে, একই এলাকার প্রধান সড়কে অস্থায়ী স্থাপনা ও দোকান দিয়ে ফুটপাত অবৈধভাবে দখল করার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার এবং ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক মালামাল জব্দ করা হয়।

ডিএমপির বিশেষ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এপ্রিল মাসে সংক্ষিপ্ত বিচার আদালত পরিচালনা করে মোট ৪৭৭টি মামলা নিষ্পত্তি করেছেন।

মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বাসসকে বলেন, ‘এপ্রিল মাসে ৪৭৭টি মামলায় সংক্ষিপ্ত বিচারে গ্রেপ্তারকৃত ৯৪৩ ব্যক্তির মধ্যে ১০৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।’

১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধি অনুসারে গুরুতর অপরাধ এবং যেসব অপরাধের জন্য হালকা শাস্তি দেওয়া হয়, সেগুলির বিচার বিশেষ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে করা যেতে পারে।

আইন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত জেলা জজ) মোহাম্মদ আতাউল হক বলেন, ডিএমপির মতিঝিল বিভাগ এপ্রিল মাসে ৮১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সামারি বিচার আদালতে ৩৬টি মামলা দায়ের করেছে। তাদের ৩৯ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং এদের মধ্যে ৩৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, ডিএমপির ওয়ারী বিভাগ ৩০ জনকে গ্রেপ্তার এবং তাদের বিরুদ্ধে সংক্ষিপ্ত বিচার আদালতে ২২টি মামলা দায়ের করে। তাদের ১৯ হাজার ১৫০ টাকা জরিমানা করা হয় এবং এদের মধ্যে তিনজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এছাড়াও, ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগ ৯৮ জনকে গ্রেপ্তার এবং তাদের বিরুদ্ধে সংক্ষিপ্ত বিচার আদালতে ৬৩টি মামলা দায়ের করে। তাদের ২৬ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়।

ডিএমপির গুলশান বিভাগ ৮৪ জনকে গ্রেপ্তার এবং তাদের বিরুদ্ধে সংক্ষিপ্ত বিচার আদালতে ৫৭টি মামলা দায়ের করে এবং ৭৩ হাজার ১৫০ টাকা জরিমানা করা হয়।

ডিএমপির লালবাগ বিভাগ ২৯ জনকে গ্রেপ্তার এবং তাদের বিরুদ্ধে আদালতে ২৪টি মামলা দায়ের করে। তাদের ৪৮ হাজার ৭শ টাকা জরিমানা করা হয় এবং এদের মধ্যে ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

আতাউল হক বলেন, ডিএমপির মিরপুর বিভাগ ৪৮৮ জনকে গ্রেপ্তার এবং তাদের বিরুদ্ধে আদালতে ১৭৭টি মামলা দায়ের করে। এদের ২ লাখ ৪৫ হাজার ৭শ টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং ২৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও, ডিএমপির উত্তরা বিভাগ ১১২ জনকে গ্রেপ্তার এবং তাদের বিরুদ্ধে আদালতে ৭৭টি মামলা দায়ের করেছে। তাদের ৯৪ হাজার ৭শ টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং ৩৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

একই সময়ে, ডিএমপির রমনা বিভাগ ২১ জনকে গ্রেপ্তার এবং তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের সংক্ষিপ্ত আদালতে ২১টি মামলা দায়ের করেছে এবং এদের ১৮ হাজার ৫শ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।