বাসস
  ১০ আগস্ট ২০২৫, ২১:৩৯

হাসিনার সরকার উন্নয়নের নামে মেগা দুর্নীতি করেছে : তারেক রহমান

রাজশাহী মহানগর বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তারেক রহমান। ছবি: বাসস

রাজশাহী, ১০ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস): বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সরকার উন্নয়নের নামে মেগা দুর্নীতি করেছে। 

রাজশাহী মহানগর বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, ‘তারা স্বাস্থ্য থেকে শিক্ষা পর্যন্ত প্রত্যেকটি খাতকেই নষ্ট করে দিয়েছে। বাংলাদেশকে নতুন করে গড়ে তুলতে হবে।’

তারেক রহমান বলেন, হাসিনা বিগত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে অবৈধভাবে বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় থেকে বিরোধী নেতাকর্মীদের অন্যায়ভাবে জেল, জুলুম ও খুন করেছে। অপরদিকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশের উন্নয়নে কাজ করেছেন, স্বাধীনতা সংগ্রামে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছেন এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। 

তিনি বলেন, ‘এটি শুধু বিএনপি নয়, অন্য দলগুলোকেও যারা ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় ছিল, তারা বেআইনি অত্যাচারের শিকার হয়েছে।’

গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচার এ দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে, এরপর বাংলাদেশ স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্ট মুক্ত হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এখন বিএনপি নেতাকর্মীদের চ্যালেঞ্জ নিয়ে নতুনভাবে বাংলাদেশকে গড়তে হবে। এ জন্য সকল নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। দলের নেতাকর্মীদের যাতে বিভক্তি না থাকে সেই ব্যাপারে সবাইকে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করেন তিনি। 

তিনি বলেন, দেশে যারা বেকার আছে তাদের কর্মসংস্থানে কলকারখানা ও শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে। বেকার সমস্যার সমাধান করতে হবে। কৃষকদের বীজ ও সার সঠিক সময়ে সরবরাহ করতে হবে। ফসল ফলিয়ে যাতে কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পায় সেই ব্যবস্থা করতে হবে। পদ্মা নদী পানির অভাবে শুকিয়ে যায়। পদ্মা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার জন্য প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতে যাবে বিএনপি। সেখানেও না হলে জাতিসংঘে যাবে। পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করবে। দেশের জনগণ বিএনপির উপর আস্থা রাখতে চায়। কিন্তু সেই আস্থার মর্যাদা রাখতে নেতাকর্মীদের কাজ করতে হবে। সেজন্য অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। চ্যালেঞ্জ পূরণে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে।  

রাজশাহী মহানগর বিএনপির সম্মেলন সম্পর্কে তিনি বলেন, সম্মেলন দলের একটি সাংগঠনিক প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দলকে সংগঠিত করা হয়। দলের লক্ষ্য উদ্দেশ্য ও আদর্শকে লালনের মাধ্যমে আমরা জনগণের কাছে পৌঁছে যাব। তিনি বলেন, একটি পরিবারের মধ্যে যেমন পারিবারিক নিয়মকানুন থাকে তেমন দলেও থাকে। রাজনৈতিক দলও একটি বিশাল পরিবার। সম্মেলনের মতো কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা দলকে পরিচালনা করি। রাজনৈতিক দলের উদ্দেশ্যই হচ্ছে দেশ ও দেশের জনগণ। কীভাবে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা যায় ও জনগণের কল্যাণের জন্য রাজনৈতিক দল কাজ করে। এই সম্মেলনের মাধ্যমে আগামীদিনে রাজশাহী মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও এমপি মিজানুর রহমান মিনু, রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহিন শওকত, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চন্দন, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ, মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা, যুগ্ম আহ্বায়ক ওয়ালিউল হক রানা, যুগ্ম আহ্বায়ক আসলাম সরকার, রাজশাহী বিএনপির মহানগর যুগ্ম আহ্বায়ক বজলুল হক মন্টু, যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম, বোয়ালিয়া থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান পিন্টু, রাজশাহী মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মাহমুজুর রহমান রিটন, রাজশাহী মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সুইট, রাজশাহী মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মীর তারেক ও রাজশাহী মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি আকবর আলী জাকি। 

এর আগে দুপুর আড়াইটার বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে দ্বিবার্ষিক সম্মেলন উদ্বোধন করেন চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। সম্মেলনের নির্ধারিত সময়ের আগে থেকেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে সমাবেশস্থল। 

প্রসঙ্গত, প্রায় দেড় যুগ পর রাজশাহী মহানগর বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো। এই সম্মেলন ঘিরে পদ প্রত্যাশীদের পোস্টার ও ফেস্টুনে ছেয়ে যায় পুরো নগর। উৎসবের আমেজ বিরাজ করে নগর জুড়ে।