বাসস
  ০২ মে ২০২৫, ২৩:৩৯
আপডেট : ০৩ মে ২০২৫, ০০:৩৯

দেশের উপযোগী করে গবেষণা প্যাটার্ন তৈরি করতে হবে: পরিকল্পনা উপদেষ্টা

আজ শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে 'ডিইউ রিসার্চ এক্সিলেন্স রিকগনেশন ২০২৫' অনুষ্ঠানে গবেষণা ও বুদ্ধিবৃত্তিক অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের প্রায় ৩শ’ জন খ্যাতিমান শিক্ষক ও গবেষককে সম্মাননা দেয়া হয় । অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বক্তৃতা করেন -ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা, ২ মে, ২০২৫ (বাসস): পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, দেশকে এগিয়ে নিতে আমাদের গবেষণার সক্ষমতাকে কাজে লাগাতে হবে। দেশের উপযোগী করে গবেষণা প্যাটার্ন তৈরি করতে হবে।

আজ শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে 'ডিইউ রিসার্চ এক্সিলেন্স রিকগনেশন ২০২৫' অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

গবেষণা ও বুদ্ধিবৃত্তিক অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের প্রায় ৩শ’ জন খ্যাতিমান শিক্ষক ও গবেষককে এই অনুষ্ঠানে সম্মাননা দেয়া হয়।

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এ এফ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ডেইলি নিউ এজ-এর সম্পাদক নূরুল কবির এবং কেডিএস গ্রুপের চেয়ারম্যান সেলিম রহমান বক্তব্য রাখেন।

ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি এ্যাসুরেন্স সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. এম রেজাউল ইসলাম স্বাগত বক্তব্য দেন। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মুনসী শামস উদ্দিন আহম্মদ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

এছাড়া, ‘উচ্চশিক্ষায় বিনিয়োগের গুরুত্ব’ শীর্ষক প্রথম অধিবেশনে উচ্চশিক্ষায় বিনিয়োগ বিষয়ক মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ-এর সভাপতিত্বে প্রথম অধিবেশনে বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই)-এর সভাপতি কামরান টি. রহমান, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের প্রতিনিধি  ফাইজা আহাদ এবং বিশ্বব্যাংকের শিক্ষা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান উচ্চশিক্ষার ভূমিকা, টেকসই প্রবৃদ্ধি ও উচ্চশিক্ষায় বিনিয়োগের বিষয়ে আলোকপাত করেন।

পরিকল্পনা  উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহকে গবেষণা ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে ‘উচ্চশিক্ষা কমিশন’ হিসেবে সংস্কারের বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে।

আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের অভিনন্দন জানান।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার সংস্কৃতি গড়ে তোলার উপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি  বলেন, শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে আমরা দলাদলি করতে চাই না। দলীয় রাজনীতি আমাদের অনেক ক্ষতি করেছে। আন্তর্জাতিক র‌্যাঙ্কিং-এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থানকে সম্মানজনক পর্যায়ে উন্নীত করার লক্ষ্যে আমরা একটি র‌্যাঙ্কিং কমিটি গঠন করেছি। ইউরোপের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিদেশের খ্যাতিমান বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের সঙ্গে আমরা যৌথ সহযোগিতামূলক শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম জোরদারের চেষ্টা করছি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে জানিয়ে উপাচার্য বলেন, গত ১ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে চীনা শিক্ষার্থীর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। বেশ কিছু ভিজিটিং প্রফেসর আমাদের সঙ্গে কাজ করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্টার-ডিসিপ্লিনারি রিসার্চ কার্যক্রম পরিচালনা ও রিসার্চ কালচার গড়ে তুলতে তিনি সকলের সহযোগিতা চান।

ডেইলি নিউ এজ-এর সম্পাদক নূরুল কবির বিশ্বের সকল ভাষার জ্ঞান, গ্রন্থ ও গবেষণাপত্র অনুবাদ করে সাধারণ মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে ‘জাতীয় অনুবাদ কমিশন’ গঠনের আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগুলো বাংলায় অনুবাদ করে শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা সফল ও আন্তর্জাতিক মানের গবেষণার জন্য ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সরকার ও অ্যালামনাইদের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করেন।

প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ও উদ্ভাবন কার্যক্রমকে উৎসাহ প্রদান, গবেষণায় উৎকর্ষ সাধন এবং গবেষকদের অনুপ্রাণিত করার লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো গবেষকদের এই প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি প্রদানের আয়োজন করা হয়েছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসকল গবেষকের গবেষণা প্রবন্ধ 'হাই ইম্প্যাক্ট জার্নাল'-এ প্রকাশিত হয়েছে, আজ তাঁদের সম্মাননা প্রদান করা হলো। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ গবেষকগণও উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত হবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এ এফ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, শুধু নিজের চাকুরি বা সুনাম অর্জনের জন্য নয়, বরং মানবকল্যাণ সাধন ও পৃথিবীকে বদলানোর জন্য গবেষণা করতে হবে। তিনি মাতৃভাষায় জ্ঞান চর্চা, জ্ঞান বিতরণ, গবেষণা ও বই প্রকাশের উপর গুরুত্বারোপ করেন।