শিরোনাম
পাবনা, ২ মে, ২০২৫ (বাসস): জেলার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা), রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) ও কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচির আওতায় ৬৯টি প্রকল্পের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে।
এসব প্রকল্পের আওতায় উপজেলার বিভিন্ন ধর্মীয়, শিক্ষা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট, সরকারি স্থাপনা নির্মাণ ও সংস্কারসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করা হচ্ছে। এতে এলাকায় উন্নয়নের ছোঁয়া লাগতে শুরু করেছে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের আমলে উপজেলায় ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাত করা হলেও এবছর স্বচ্ছতার সাথেই প্রকল্পের কাজ চলছে বলে জানা গেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. নাজমুন নাহার ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফেরদৌস আলম নিয়মিত এসব কাজের তদারকি করছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে মোট ৬৯টি প্রকল্প গৃহিত হয়েছে। এর মধ্যে ৪০টি প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। বাকি প্রকল্পের কাজ চলছে। জুন মাসের মধ্যে এসব কাজ শেষ হবে। এর মধ্যে তিনটি প্রকল্পের কাজ মাঠে ফসল থাকায় শুরু করা যায়নি। ফসল উঠার পর পরই কাজ আরম্ভ হবে। এখানে ২০টি কাবিটা প্রকল্পের বিপরীতে ৮৬ লাখ ৭ হাজার ৮১৫ টাকা, ৩৯টি টিআর প্রকল্পের বিপরীতে ৮৪ লাখ ৭৪ হাজার ৯৭৫ টাকা এবং ১০টি কাবিখা প্রকল্পের বিপরীতে গম বরাদ্দ দেওয়া হয়।
এলাকাবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ উপজেলায় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে টিআর-কাবিটা প্রকল্পের ছোঁয়া লেগেছে। যার ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে কৃষি, শিক্ষা ও ব্যবসাসহ বিভিন্ন সেক্টরে ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।
হাটগ্রামের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আতিক খান জানান, কাবিটা প্রকল্পের আওতায় হাটগ্রাম কচুরীগাড়া কালভার্ট হতে আব্দুল মান্নান মেম্বরের বাড়ি অভিমুখে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। আগে রাস্তাটি নিচু থাকায় বর্ষার পানিতে তলিয়ে যেতো। এখন রাস্তাটি উচু করায় বর্ষা মৌসুমে চলাচলে আর কোন সমস্যা হবে না।
পাটুল গ্রামের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম জানান, গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার প্রকল্পের আওতায় লক্ষ্মীকোল থেকে তারাপুর মসজিদ অভিমুখে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। এর ফলে রাস্তাটি দিয়ে মানুষসহ যান চলাচলে অনেক সুবিধা হয়েছে।
চর ভাঙ্গুড়া গ্রামের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাকির হোসেন জানান, টিআর প্রকল্পের আওতায় চরভাঙ্গুড়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষ সংস্কার করা হয়। কক্ষটি দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় ছিল।
উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক হুমায়ুন আহমেদ মুন বলেন, স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের সময় উন্নয়ন প্রকল্পের নামে এখানে হরিলুট হয়েছে। তবে বর্তমানে ইউএনও নাজমুন নাহার যেভাবে টিআর /কাবিখা প্রকল্পের কাজ করছেন তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।
প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফেরদৌস আলম জানান, গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের লক্ষ্যে এই প্রকল্পগুলো হাতে নেওয়া হয়েছে। কোনো প্রকল্পের সম্পূর্ণ বিল ছাড় করা হয়নি। নির্ধারিত কাজ শেষ হলেই কেবল চূড়ান্ত বিল প্রদান করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. নাজমুন নাহার জানান, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রকল্পের কাজ করা হচ্ছে। এখানে কোনো রকম অনিয়মের সুযোগ নেই। শতভাগ কাজ বুঝে না পেলে সম্পূর্ণ বিল প্রদান করা হবে না।