বাসস
  ১০ মার্চ ২০২৪, ২০:১৮

বিশ্ববিদ্যালয় ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির আহ্বান ইউজিসি’র

ঢাকা, ১০ মার্চ, ২০২৪ (বাসস): দেশে মধ্যম সারির ব্যবস্থাপক ও দক্ষ জনবল তৈরির লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে শিল্প ও বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগিতার সম্পর্ক জোরদার করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহবান জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। 
এক্ষেত্রে শিগগির অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি পলিসি পেপার তৈরি করা হবে জানিয়েছেন কমিশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর। 
আজ রোববার (১০ মার্চ) ইউজিসিতে আয়োজিত এক সভায় সভাপতিত্বেকালে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন,  সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ে বাজার চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রেখে দেশে মধ্যম সারির ব্যবস্থাপক তৈরি সংক্রান্ত সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। 
প্রফেসর আলমগীর বলেন, বাংলাদেশে ব্লেন্ডেড শিক্ষা পদ্ধতি বাস্তবায়ন এবং বাজার ভিত্তিক দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান নিশ্চিতকরণ বিষয়ে জাতীয় টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের শ্রমবাজারের উপযোগী করে গড়ে তুলতে দেশের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে পারেন। এক্ষেত্রে তারা জাপানসহ উন্নত দেশের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করতে পারে। 
তিনি আরো বলেন, যুগের চাহিদানুসারে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করা না গেলে বিদেশি কর্মীদের কাজ করার সুযোগ রোধ করা যাবে না। 
এসময় তিনি মেধা পাচার ঠেকাতে মেধাবী ও তরুণদের দেশের উন্নয়নে দেশ প্রেম নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। 
ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের বলেন, প্রতিবছর প্রায় ২০ লাখ মানুষ চাকরির বাজারে প্রবেশ করছে। ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে হলে এ জনগোষ্ঠীকে উপযুক্ত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। 
টিআইবি প্রতিবেদনের তথ্য উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, দেশের ১.১৫ কোটির বেশি শ্রমিক বছরে ২০-২২ বিলিয়ন বৈদিশিক মুদ্রা আয় করছে। অন্যদিকে, মাত্র ২.৫ লাখ বিদেশী কর্মী ৪.৫ বিলিয়ন ডলার দেশ থেকে নিয়ে যাচ্ছে। বাজারের চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা না গেলে অর্থের বহিঃপ্রবাহ রোধ করা যাবে না। তিনি দেশের ৭.৩ কোটি কর্মক্ষম জনবলের দক্ষতা উন্নয়নে ১৪ টি প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় স্বার্থে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানান। 
সভায় মধ্যম সারির ব্যবস্থাপক ও দক্ষ জনবল তৈরির লক্ষ্যে একটি নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ, যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ, শিল্প ও বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি, ভাষাগত দক্ষতা, ইন্টার্নশিপ ও ট্রেড কোর্স বাধ্যতামূলকভাবে চালু করা, দক্ষতার ধরণ পরিবর্তন, সফট স্কিলস বৃদ্ধি করা, ল্যাব সুবিধা বৃদ্ধি ও জব ফেয়ার আয়োজন করার সুপারিশ করা হয়। 
এছাড়াও, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় উচ্চশিক্ষা কারিকুলাম যুগোপযোগী করা এবং কারিকুলাম প্রণয়নে শিল্প প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের যুক্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এছাড়া, সভায় বিসিএসের কারণে শিক্ষার্থীদের বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনায় কম গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়টিও সভায় আলোচিত হয়। 
বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জি এস এম জাফর উল্লাহ, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম হাবিবুর রহমান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এমদাদুল হক চৌধুরী, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. ফরিদ উদ্দিন আহমদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শাহ আলিমুজ্জামান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. সৈয়দ মিথুন আলী, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুর রব খান, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আলী আকবর খান, বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির ভাইস-চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরী, বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি মাহবুবুল আলম, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. সারওয়ার হোসেন এবং বিজিএমইএ’র সিনিয়র সহকারী সচিব রাশেদুল ইসলাম অংশগ্রহণ করেন। 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়