বাসস
  ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:২৬
আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৪৭

জুলাই অভ্যুত্থানের ৬৫টি হত্যাসহ ১১৩ মামলার তদন্ত করছে সিআইডি

ওবাইদুর রহমান

ঢাকা, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস): জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে সংঘটিত সহিংসতার ঘটনায় দায়ের হওয়া ১১৩টি গুরুত্বপূর্ণ মামলার তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তদন্তে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ৬৫টি হত্যা মামলা, যেখানে মোট ৩ হাজার ৯১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। 

এসব মামলায় শীর্ষ পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রিপরিষদের অধিকাংশ সদস্য, আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান দমনে বর্বর বলপ্রয়োগের অভিযোগে সারাদেশে ১ হাজার ৭৩০টি মামলা দায়ের হয়। এর মধ্যে ৭৩১টি হত্যা মামলা রয়েছে। 

এসব ঘটনায় প্রধান আসামি করা হয়েছে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে।

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান বাসসকে জানান, ‘তদন্তাধীন মামলাগুলোর মধ্যে ঢাকা মহানগর এলাকায় ৬১টি মামলা এবং দেশের আটটি বিভাগীয় শহরে ৫২টি মামলা রয়েছে। হত্যাকাণ্ড ছাড়াও অস্ত্র-গুলি, ভাঙচুর ও সহিংস হামলার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় বাংলাদেশ দণ্ডবিধি ছাড়াও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘তদন্ত প্রক্রিয়ায় সিসিটিভি ফুটেজ, ভিডিও প্রমাণ, প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য এবং গোয়েন্দা তথ্য ব্যবহার করে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করা হচ্ছে। আমরা দ্রুত চার্জশিট আদালতে দাখিল করতে চাই, যাতে অপরাধীরা শাস্তি পান এবং দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।’

পুলিশ সদর দপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘটনায় ইতোমধ্যে ৩৪টি মামলায় চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১৩টি হত্যা মামলা এবং ২১টি অন্যান্য মামলা। হত্যা মামলায় মোট ১ হাজার ৩৯০ জন এবং অন্যান্য মামলায় ৭৭৭ জনকে চার্জশিটে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এক্ষেত্রে শেরপুর, ফেনী, চাঁদপুর, কুমিল্লা, ঢাকা ও কুড়িগ্রাম জেলায় এবং রাজশাহী ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে সংঘটিত হত্যা মামলাগুলোর চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বগুড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নওগাঁ, ময়মনসিংহ ও জামালপুর জেলার ২১টি অন্যান্য মামলার চার্জশিট দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তর নিশ্চিত করেছে যে সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তারা এসব মামলার তদারকি করছেন, যাতে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করা যায়। 

এছাড়া তারা বলেছেন, ‘এমন ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে না ঘটে, সে জন্য সমাজের প্রতিটি স্তরে আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা শক্তিশালী করা হবে।’