বাসস
  ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১:২১
আপডেট : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩:২৯

দুবাইয়ে ১২০০ কোটি টাকা পাচার, স্ত্রীসহ সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান। ফাইল ছবি

ঢাকা, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : ১২০০ কোটি টাকা দুবাইয়ে পাচারের অভিযোগে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী (৫৬) ও তার স্ত্রী রুকমীলা জামানের (৪৬) বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সাইফুজ্জামান-রুকমীলা ছাড়াও আরো অজ্ঞাতনামা আরো ৫-৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।

আজ চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কোতয়ালী থানায় সিআইডি বাদী হয়ে এ মামলা করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধিত ২০১৫) এর ৪(২)) অভিযোগ আনা হয়েছে। সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খানের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান জানানো হয়।

সিআইডির দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়, পাচারকৃত অর্থ দিয়ে দুবাইয়ের অভিজাত এলাকাগুলোতে মোট ২২৬টি ফ্ল্যাট, একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংক হিসাব পরিচালনার প্রমাণ মিলেছে। এসব অর্থ দেশের বাইরে পাচার করা হয় সরকারের অনুমতি ছাড়াই, যা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধিত ২০১৫) অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০১৬ সাল থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে দুবাইয়ের আল বারসা সাউথ, জাদ্দাফ, বুর্জ খলিফা, জাবাল আলী, ওয়ার্ল্ড আইল্যঠহু, জাবেল, নাদ আল সেবা, মারসা দুবাই প্রভৃতি এলাকায় সাইফুজ্জামান চৌধুরীর নামে এসব সম্পত্তি কেনা হয়। এসব সম্পত্তির আরব আমিরাতের স্থানীয় মুদ্রায় বাজারমূল্য ৩৩ কোটি ৫৬ লাখ ৫৭ হাজার ১৬৮ দিরহাম। এছাড়াও তার স্ত্রী রুকমীলা জামানের নামে আল বারসা সাউথ থার্ড এলাকায় ‘কিউ গার্ডেন বুটিক রেসিডেন্স-ব্লক বি’ নামে দুইটি সম্পত্তি পাওয়া গেছে, যার মূল্য প্রায় ২২ লাখ ৫০ হাজার দিরহাম।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, অভিযুক্তদের দুবাইয়ের দুটি কোম্পানির মালিকানা ও পরিচালনায় সংশ্লিষ্টতা রয়েছে যার একটি নির্মাণ সামগ্রী ব্যবসার জন্য ‘জেবা ট্রেডিং এফজেডই’ এবং অপরটি সফটওয়্যার ব্যবসার জন্য ‘র‌্যাপিড রেপটর এফজেডই’। দুবাই ইসলামী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক ও ফার্স্ট আবুধাবি ব্যাংকের দুইটি হিসাবসহ মোট চারটি একাউন্টে প্রচুর পরিমাণে দিরহাম ও মার্কিন ডলারে লেনদেনের তথ্য মিলেছে, যার পরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩১১ কোটি ২৬ লাখ ৬ হাজার ৭৯৫ টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বলছে, বিদেশে কোনো সম্পত্তি ক্রয়, বিনিয়োগ বা ব্যাংক হিসাব খোলার বিষয়ে সাইফুজ্জামান চৌধুরী বা তার পরিবারের সদস্যদের নামে সরকার থেকে কোনো অনুমোদন না নিয়ে এসব অর্থ সম্পূর্ণ অবৈধভাবে পাচার করা হয়েছে। সাইফুজ্জামান চৌধুরী ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি থেকে পর্যায়ক্রমে ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী এবং পরবর্তীতে পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এছাড়া তিনি ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি), আরামিট গ্রুপ ও চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির গুরুত্বপূর্ণ পদে ও দায়িত্বে ছিলেন।