বাসস
  ০৫ আগস্ট ২০২৫, ১৭:০৩

দিনাজপুরে সড়কে নেমে উৎসবে মেতেছিল ছাত্র-জনতা 

ফাইল ছবি

রোস্তম আলী মন্ডল

দিনাজপুর, ৫ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : ৩৬ দিনের গণআন্দোলন শেষে ২০২৪ সালের আজকের দিনে খুশির জোয়ার নামে দিনাজপুরেও। অনেক কিছু হারানো ও ত্যাগের পর গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর জেলার রাজপথে মানুষের উল্লাস ছিল দেখার মতো। আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা রাস্তায় নেমে পতাকা নিয়ে নানা স্লোগানে আর উৎসবে মেতে উঠেছিল সেদিন।

শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবরে চব্বিশের ৫ আগস্ট দিনাজপুরে সড়কে নামে মানুষের ঢল। সেদিন কারও হাতে ছিল লালসবুজের পতাকা, কারও হাতে বাঁশি, কেউবা থালাবাসন বাজিয়ে করছেন উল্লাস, চলছে ভুয়া ভুয়া স্লোগান। অসংখ্য মানুষ সেদিন ঘর থেকে পথে বের হয়ে আনন্দ মিছিলে অংশ নেয়।  

জেলার কয়েকজন আন্দোলনকারী জানান, ওই দিন সকাল থেকে দলবদ্ধ হয়ে শহরের নিমনগর ফুলবাড়ী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শহরের অলিগলিতে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। থেমে থেমে মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। দুপুর দুইটার পর থেকে শহরের বিভিন্ন স্থানে শুরু হয় মিষ্টি বিতরণ। এরই মধ্যে শহরের ভুটিবাবুর মোড়, মালদহপট্টি হয়ে একদল আন্দোলনকারী শহরের বাসুনিয়াপট্টি এলাকায় আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাংচুরও করে।

চারুবাবুর মোড় এলাকায় সুজন নুর নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা এই প্রজন্ম অবাধ তথ্য- প্রযুক্তির যুগে বেড়ে উঠেছি। হাসিনার সরকার আমাদের পালস বোঝেনি। তারা তাদের মতো রাষ্ট্র পরিচালনা চালিয়ে-ছিল। আমাদের মতামতের গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি। অবশেষে ফ্যাসিস্টের পরাজয়।

মাসুদুর রহমান নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে আমরা ভোট দিতে পারিনি। এ দেশ মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন হয়েছে কিন্তু দেশটিকে লুটপাট করে শেষ করে দেওয়া ছিল। আজকে শিক্ষার্থীরা আমাদের অধিকার আদায় করে দিয়েছেন। 

রবিউল হাসান নামের এক কলেজশিক্ষক বলেন, শিক্ষার্থীরা আন্দোলন সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে যেটা করে দেখালো, আমরা তাদের কাছে চির কৃতজ্ঞ। নিশ্চয়ই দেশে আগামীতে ভালো কিছু হতে যাচ্ছে বলে আশা রাখি। তরুণদের হাতে আগামীর বাংলাদেশের মজবুত ভিত্তি গড়ে উঠবে বলে প্রত্যাশা করছি।

শেষ হাসিনা সরকার পতনের খবর ছড়িয়ে পরার সঙ্গে সঙ্গে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা প্রতিবাদ হিসেবে শহরে মুন্সিপাড়ায় অবস্থিত  সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিমের বাসভবন, জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর শুরু করে দিয়েছিল।