শিরোনাম
সুনামগঞ্জ, ৩ আগস্ট ২০২৫ (বাসস) : জেলা শহরটি রাজনীতির ব্যাকরণে সারা দেশের চেয়ে আলাদা। কর্তৃত্ববাদী সরকারের আমলেও সুনামগঞ্জ শহর ছিল শান্ত। কিন্তু, ২৪’ এর ৩ আগস্ট সুনামগঞ্জের ছাত্রছাত্রীসহ সাধারণ মানুষের ধৈর্যের বাধ ভেঙ্গে যায়। আর তাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে সারা দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হয়। তখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে সুনামগঞ্জের ছাত্র সমাজও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।
সুনামগঞ্জে জুলাইয়ের বৈষম্যবিরোধী ছোট আকারের আন্দোলনও ছাত্রলীগ তখন সইতে পারছিল না। সারা দেশের সংবাদ যখন টিভির পর্দায় ভেসে ওঠে সুনামগঞ্জের ব্যবসায়ীরা তখনও স্বাভাবিকভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছিলেন। তখনও তেমন কোন প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি মানুষের মাঝে।
তবে, ৩ আগস্ট সুনামগঞ্জের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সারা দেশের ছাত্রদের সাথে আন্দোলনে একাত্নতা ঘোষণা করে কর্মসূচি পালন করেছিল। সুনামগঞ্জের বক পয়েন্ট থেকে একটি মিছিল বের করা হলে ওই মিছিলে ছাত্রলীগ ধাওয়া করে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জুলাই এলায়েন্সের জেলা মুখপাত্র শবনম জ্যোতি জানান, আমি ওই দিন শহরে খালার বাসায় ছিলাম। আমাকে ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে যুক্ত করা হয়। তখন থেকে আমি আরো সক্রিয় হই। ৩ আগস্ট বক পয়েন্টের মিছিল থেকে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের মেধাবী ছাত্র মেহেদি হাসানকে গ্রেফতার করা হয়। এতে পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা বারি সিদ্দীকী বলেন, বক পয়েন্টের শান্তপ্রিয় মিছিলে ছাত্রলীগ ধাওয়া করে মিছিলটি পন্ড করে দিয়েছিলো। কিন্তু আমরা ঐক্যবদ্ধ ছিলাম। কোটা বিরোধী আন্দোলনে সফল হতে হবে এটাই আমাদের লক্ষ্য ছিল। আমাদের শান্তপ্রিয় শহরে আমাদের দ্বারা কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তখনকার পুলিশ প্রশাসন ছাত্রলীগকে প্রটোকল দিতো। তারপরও আমরা সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা থেমে থাকিনি।
তিনি বলেন, ওই দিন শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি আদায় ও দেশব্যাপী হত্যা, গণগ্রেপ্তার ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সুনামগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল করেছিলে ছাত্ররা।
তিনি আরো বলেন ২০২৪ সালের শনিবার (৩ আগস্ট) দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে গণমিছিলটি পৌর শহরের জাদুঘর প্রাঙ্গণ থেকে বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুরাতন বাসস্টেশন এলাকায় গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়েছিল। সমাবেশে শিক্ষার্থীদের প্রত্যয় ছিল, আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা শান্তিপ্রিয়ভাবে অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে যে দাবি তুলেছি, সে দাবি আদায় করবো। কিন্তু রাস্তায় দাঁড়াতেই পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি করতো।
এদিকে গণমিছিল ও সমাবেশ চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীরা রাস্তার মাঝে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকলে পৌর শহরের সড়ক দিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।