বাসস
  ০৩ আগস্ট ২০২৫, ০০:৪৪

ফিরে দেখা জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪, ২ আগস্ট : সিলেটে গণমিছিলে পুলিশের হামলা, ছাত্র-জনতার প্রতিরোধ

ছবি : সংগৃহীত

সিলেট, ২ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গত বছর আজকের দিনে(২ আগস্ট) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণমিছিলে হামলা করে পুলিশ। গুলি, টিয়ার শেল, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে ছাত্রদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার চেষ্টা করে। পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলে ছাত্র-জনতা। এতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) সংলগ্ন আখালিয়া থেকে মদিনা মার্কেট, পাঠানটুলা এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের গুলিতে শিক্ষার্থী ছাড়াও পথচারী শিশু ও সাংবাদিকরা গুলিবিদ্ধ হন। সেদিনের প্রতিরোধে শিক্ষার্থীদের পক্ষে অবস্থান নেন পাড়ামহল্লার বহু নারী-পুরুষ, মার্কেটের ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, দিনটি  ছিল শুক্রবার। জুমার নামাজের পর থেকেই শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে শিক্ষার্থীদের জমায়েত ছিল। শুধু ছাত্র নয়, মিছিলে অংশ নেন সাধারণ মানুষ। বেলা তিনটার দিকে মিছিল শুরু  হলে পুলিশ তাতে বাঁধা দেয়। বাঁধা অতিক্রম করে মিছিলটি মদিনা মার্কেটের দিকে অগ্রসর হতে থাকলে পুলিশ তাদের উপর সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল ও শটগানের গুলি ছুঁড়ে। এতে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। কিন্তু দমে যায়নি। বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা প্রতিরোধ গড়ে তুললে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। আখালিয়া, মদিনা মার্কেট, পাঠানটুলা, বাগবাড়িসহ আশেপাশের এলাকায় আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। শক্তি বাড়িয়ে সেদিন আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা অব্যাহত রাখে পুলিশ। বিশেষায়িত টিম সিআরটি ও এপিসি যোগ হয়। কিন্তু গলিতে গলিতে ছাত্র-জনতার অবস্থানের কারণে তারা ব্যর্থ হয়। রাত ৯টা পর্যন্ত চলে থেমে থেমে সংঘর্ষ।

এর মধ্যে আখালিয়া এলাকায় পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হয় ১২ বছর বয়সী শিশু শফিক আলী, বার্তা২৪ এর সিলেট প্রতিনিধি মোশাহিদ আলীসহ কয়েকজন আহত হন।

আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া তানজিনা আক্তার নামের এক শিক্ষার্থী জানান, সেদিন পুলিশের ধাওয়ায় তারা বেশ কয়েক জন নারী শিক্ষার্থী একটি বাসায় আশ্রয় নেন। পেছনে পেছনে সেখানে অভিযানে যায় পুলিশ। তখন বাসার নারীরা তাদের আশ্রয় দেন এবং সাহেদা খান নামের ষাটোর্ধ্ব এক নারী পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান। তার এই মারমুখী আচরণে পুলিশ সেদিন ওই বাসায় অভিযান না চালিয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হয়। কিন্তু পরবর্তীতে ওই গলির মুখে পুলিশের অবস্থানের কারণে ১৫-২০ জন শিক্ষার্থী বের হতে পারছিলেন না। এক পর্যায় রাত ৯টার দিকে  একটি বিয়ের গাড়িতে করে তারা বের হন।

এদিন, হবিগঞ্জেও আন্দোলনকারীদের উপর হামলা চালায় পুলিশ-ছাত্রলীগ। নিহত হন সিলেটের মোস্তাক আহমদ (২৪)। তার বাড়ি সিলেটের টুকেরবাজার এলাকায়।

এদিকে, ২ আগস্ট দিনগত রাতে সিলেট নগরে ব্লকরেইড দিয়ে শিক্ষার্থী ও বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারে অভিযোগ অব্যাহত রাখে সিলেট মহানগর পুলিশ।