শিরোনাম
।। মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন ।।
ফেনী, ১ আগস্ট ২০২৫ (বাসস): চব্বিশের জুলাই আন্দোলনে উত্তাল ছিল ফেনী শহর। আন্দোলন দমাতে বিপুল সংখ্যক আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ক্যাডারদের সশস্ত্র মহড়ায় পুরো শহরে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করে। এসব বাধা অতিক্রম করেই ১ আগস্ট ‘রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোস’ কর্মসূচি পালিত হয়।
আন্দোলনের শুরু থেকে মাঠে সক্রিয় গণমাধ্যমকর্মী নুর উল্লাহ কায়সার বাসসকে বলেন, ‘১ আগস্ট টানটান উত্তেজনা আর উৎকণ্ঠার মধ্যেই সন্ধ্যার পর থেকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে এক দুইজন করে শিক্ষার্থী কর্মসূচিতে অংশ নিতে ট্রাঙ্ক রোডের দিকে আসতে থাকে। তাদের নির্ধারিত স্থান ছিল প্রেসক্লাবের সামনে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের সশস্ত্র ক্যাডাররা আগে থেকেই ওই এলাকা ঘিরে রাখে। পরে শিক্ষার্থীরা বড় মসজিদের পেছন দিয়ে খাজা আহমদ সড়কে জড়ো হতে থাকে। এক পর্যায়ে প্রেসক্লাবের দিকে আসতে চাইলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পরে তারা বাধ্য হয়ে টাউন ফার্মেসি ও আবেদিন জুয়েলার্সের সামনেই মোমবাতি প্রজ্বলন করে ‘রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোস' কর্মসূচি পালন করে।’
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সংগঠক আব্দুল্লাহ আল যোবায়ের বলেন, সানি মজুমদার, জাহিদুল আবেদীন সাগর, মুহাইমিন তাজিম ও শিবিরের জাহিদ হোসেনসহ আমরা কয়েকজন আলোচনা করে ১ আগস্টের কর্মসূচি ঠিক করি। কর্মসূচিটি প্রেসক্লাবের সামনে ছিল। ওইদিন সন্ধ্যায় বৃষ্টি হওয়ায় অনেকেই আসতে দেরি করে। ইতোমধ্যে প্রেসক্লাবের সামনে পুলিশ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ ক্যাডাররা অবস্থান নেয়। সাগরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল বড় মসজিদ থেকে একটা টিম নিয়ে আসবে। প্রেসক্লাবের পাশে যে গলি সেই গলি দিয়ে আরেকটা টিম নিয়ে আমি বের হবো।
তিনি বলেন, আমাদের পূর্ব নির্ধারিত দুই জায়গাতেই পুলিশ অবস্থান নেয়। এতে আমরা এক জায়গায় জমায়েত হয়ে পাশের গলি দিয়ে সড়কে উঠে প্রেসক্লাবের সামনে যাওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু পুলিশের জন্য আমরা আর যেতে পারিনি। পুলিশ সেখানেও আমাদের বাধা দেয়। পুলিশের সাথে বিজিবিও ছিল। পেছনে ছিল বিপুল সংখ্যক ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সশস্ত্র ক্যাডার। তারা কোনোভাবে আমাদের রাস্তায় উঠতে দেয়নি। পরে সেখানে মোমবাতি প্রজ্বলন করে কর্মসূচি শেষ করে দেওয়া হয়।
আন্দোলনে থাকা ফেনী কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদুল আবেদীন সাগর বাসসকে বলেন, ‘১ আগস্ট সন্ধ্যার পর আমরা মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচি আয়োজন করি। প্রথম দিকে উপস্থিতি কম থাকলেও পরে সংখ্যা বাড়তে থাকে। সেখানে আমি, জুবায়ের ও তাজিম প্ল্যান করে মোমবাতি জ্বালালাম।’
আন্দোলনের স্মৃতি স্মরণ করে তিনি বলেন, গতবছর ১ আগস্ট আমরা সমাবেশ করার জন্য বড় মসজিদ হয়ে প্রেস ক্লাবের পাশের গলি হয়ে প্রথমে শহীদ মিনারে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ আমাদের প্রেসক্লাবের আগে সড়কে ওঠার মাথায় বাধা দেয়। এরপরও আমরা পুলিশকে বুঝিয়ে প্রেসক্লাবে যাওয়ার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু আমরা চেষ্টা করেও আর পারিনি। ওইদিন সমাবেশে ছাত্র-ছাত্রীরা অংশ নেন। সেদিন জুবায়ের, তাজিম ছাড়াও দাগনভূঞার মানিক, আজিম ও স্নেহাসহ অনেক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল।