শিরোনাম
মোহাম্মদ নুর উদ্দিন
হবিগঞ্জ, ১ আগস্ট ২০২৫ (বাসস): বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আজকের দিনে দিনভর হবিগঞ্জ শহরে ছিল পুলিশের সাথে ছাত্র-জনতার সংঘর্ষ। অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে পুরো শহর। দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় শহর। বিশেষ কোন প্রয়োজন ছাড়া লোকজনকে শহরে দেখা যায়নি।
শহরের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ চলছিল। পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়লেও ছাত্র-জনতা পিছপা হয়নি। তবে বিজিবি ও সেনাবাহিনীর টহল ছিল নজরদারিতে।
১ আগস্ট বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা শহরের কোট মসজিদের সামনে জড়ো হয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এ সময় তৎকালীন সহকারী পুলিশ সুপার খলিলের নেতৃত্বে একদল পুলিশ বাধা দিলে শুরু হয় সংঘর্ষ।
দিনভর চলতে থাকে সংঘর্ষ। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে ছাত্র-জনতা শহরের সবুজবাগ এলাকায় রাস্তায় ইট দিয়ে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে আইনশংখলাবাহিনীর সাথে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। আর এতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে পুরো শহর।
সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশের তাণ্ডবে আহত হন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ও জনতা। তবে থানার সামনে সদর হাসপাতাল হওয়ার কারণে অনেকেই ভয়ে চিকিৎসা নিতে পারেনি।
পুলিশের সাথে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও অংশগ্রহণ করে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। ভাঙচুর করা হয় যানবাহনসহ বিভিন্ন স্থাপনায়।
সন্ধ্যার দিকে পুলিশকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে ছাত্ররা। তবে পুলিশের গুলির মুখে বেশি অগ্রসর হতে পারেনি শিক্ষার্থীরা। পরে যৌথবাহিনীর একাধিক টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করে।
এরপর রাতে পুলিশ শিক্ষার্থীদের বাসায় বাসায় হানা দিয়ে গ্রেফতারের চেষ্টা করে। তবে শিক্ষার্থীরা আগে থেকে জানতে পেরে বাসায় অবস্থান না করে নিকটাত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে অবস্থান নেয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক আহ্বায়ক আরিফ তালুকদার জানান, পহেলা আগস্ট আমরা বিভিন্ন স্থান থেকে মিছিল নিয়ে শহরে উঠি। এরপর পুলিশ বাধা দিলে শুরু হয় সংঘর্ষ। দিনভর চলে সংঘর্ষ। তবে আমাদের সাথে সাধারণ লোকজন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা অংশ নিলে শক্তিশালী সংঘর্ষ বাধে।
তবে আমরা পিছপা হইনি। সংঘর্ষে এক পর্যায়ে পুলিশ বাধ্য হয়ে ফিরে গিলে আমরা চলে যাই। তিনি বলেন, আমরা ছিলাম ন্যায় ও সত্যের পক্ষ তাই আমাদের বিজয় হয়েছে।