বাসস
  ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩:৫৯

গিনি: বৈধতার খোঁজে অভ্যুত্থান-নেতা দৌম্বুয়া

ঢাকা, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ (বাসস) : সামরিক পোশাক ছেড়ে বেসামরিক পোশাকে এলেও গিনি এখনো লৌহমুষ্টিতেই শাসন করছেন জান্তা নেতা মামাদি দৌম্বুয়া। মঙ্গলবার রাতে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছেন তিনি।

কোনাক্রি থেকে বার্তাসংস্থা এএফপি এ খবর জানায়। 

অস্থায়ী ফল অনুযায়ী, দৌম্বুয়া পেয়েছেন ৮৬ দশমিক ৭২ শতাংশ ভোট। ভোটার উপস্থিতি ছিল ৮০ দশমিক ৯৫ শতাংশ।

নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি প্রধান বিরোধী নেতারা। অনেকের মতে, ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর বেসামরিক শাসনে ফেরার প্রতিশ্রুতি দিলেও ক্ষমতাকে বৈধতা দিতেই এই নির্বাচন আয়োজন করেন দৌম্বুয়া।

ডিসেম্বরের শুরুতে প্রকাশিত এক ভিডিওতে শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতিশ্রুতি দেন ৪১ বছর বয়সী দৌম্বুয়া। মাথায় সাদা ক্যাপ এবং নিজের নাম ও ‘বিল্ডিং টুগেদার’ স্লোগান লেখা টি-শার্ট পরে ডেস্কের পেছনে বসে বক্তব্য দেন তিনি। প্রচারণা জুড়ে এটিই ছিল তার একমাত্র প্রকাশ্য বক্তব্য।

ভোটের দিন ঘনিয়ে এলে, তার চেনা ক্যামোফ্লাজ পোশাক ও লাল বেরেটের জায়গায় দেখা যায় বেসামরিক পোশাক। তবে প্রতিবারই তাকে ঘিরে থাকেন স্পেশাল ফোর্সেস গ্রুপের সদস্যরা—যে ইউনিট থেকে তার উত্থান।

এই বাহিনীর প্রধান হিসেবেই তৎকালীন কর্নেল দৌম্বুয়া ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে অভিযান চালান। ক্ষমতাচ্যুত করেন বেসামরিক প্রেসিডেন্ট আলফা কঁদেকে। কঁদে প্রায় ১১ বছর ক্ষমতায় ছিলেন।

তৃতীয় মেয়াদে কঁদের পুনর্নির্বাচনের পর সহিংস দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলাকালে অভ্যুত্থানকে শুরুতে স্বাগত জানিয়েছিলেন অনেক গিনিবাসী।

ক্ষমতা দখলের পর দৌম্বুয়া ঘোষণা দিয়েছিলেন, বেসামরিক শাসনে ফেরাতে যে নির্বাচন হবে, তাতে জান্তার কেউ প্রার্থী হবেন না। কিন্তু পরবর্তীতে নিজেকে জেনারেল পদে উন্নীত করেন তিনি। সেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন। ভিন্নমতও কঠোরভাবে দমন করেন।

-দমন-পীড়ন-

দৌম্বুয়ার শাসনে একাধিক রাজনৈতিক দল ও গণমাধ্যম সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। ২০২২ সালে বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করা হয়। নিষিদ্ধ বিক্ষোভ দমন করা হয় কঠোরভাবে। বহু বিরোধী নেতা ও নাগরিক সমাজের কর্মী গ্রেপ্তার হন। কেউ দণ্ডিত হয়েছেন। কেউ বাধ্য হয়ে দেশ ছেড়েছেন।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জোরপূর্বক গুম ও অপহরণের অভিযোগও বেড়েছে।