শিরোনাম

ঢাকা, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : সিরিয়ার লাতাকিয়া প্রদেশের কর্তৃপক্ষ গতকাল মঙ্গলবার দেশটির ক্ষমতাচ্যুত নেতা বাশার আল-আসাদের শাসনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ২১ জনকে গ্রেফতার করেছে।
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, আগের রাতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পর প্রাদেশিক রাজধানীতে কারফিউ জারি করা হয়েছে।
খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।
গত সোমবার লাতাকিয়া শহরের আলাউইত অধ্যুষিত এলাকায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। এর এক দিন আগে তিন জন নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে একজন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ছিলেন।
এই ঘটনায় সংখ্যালঘুদের উপকূলীয় কেন্দ্রস্থলে এক মারাত্মক মসজিদে বোমা হামলার প্রতিবাদে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, উপকূলীয় লাতাকিয়া প্রদেশে নিরাপত্তা বাহিনী ২১ জন ‘আগের সরকারের অবশিষ্টাংশকে’ আটক করেছে, যারা অপরাধমূলক কার্যকলাপ, ধর্মীয় উস্কানিমূলক কাজ ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনীর লক্ষ্যবস্তুতে জড়িত।
লাতাকিয়া ও সিরিয়ার আলাউইত উপকূলীয় কেন্দ্রস্থলের একটি মিশ্র শহর, যেখানে বেশ কয়েকটি সুন্নি-সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকাও রয়েছে। আজ বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ কার্যকর করা হয়েছে।
এএফপি’র সাংবাদিকরা গতকাল মঙ্গলবার স্থানীয় বাসিন্দাদের দেখেছেন, যারা গত রাতের হামলার পর ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করছেন, হামলায় গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ও বেশ কয়েকটি দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়েছে।
সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস মনিটর জানিয়েছে, বেশ কয়েকজন পুরুষ ‘ধাওয়া করার পর’ একজন তরুণ আলাউই ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
সিরিয়ার কর্তৃপক্ষ গতকাল সোমবার জানিয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনী লাতাকিয়ায় তাদের মোতায়েন জোরদার করেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নুরদ্দীন আল-বাবা গতকাল মঙ্গলবার বলেছেন, সিরিয়া নাগরিকদের মর্যাদা বা তাদের সম্পত্তির ক্ষতি করে এমন যে কোনও ধরনের নাশকতা বা আক্রমণ প্রত্যাখ্যান করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
গত বছরের ডিসেম্বরে বাশার আল-আসাদের ক্ষমতাচ্যুতির পর সিরিয়ার আলাউই সংখ্যালঘু গোষ্ঠী আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হয়েছে। কারণ আসাদ নিজেও আলাউইত ছিলেন।
গত শুক্রবার সিরিয়ার মধ্যাঞ্চলীয় শহর হোমসের আলাউইত অধ্যুষিত এলাকায় একটি মসজিদে বোমা হামলায় আট জন নিহত হন।
সারায়া আনসার আল-সুন্নাহ এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। এটি একটি ইসলামপন্থী জঙ্গি গোষ্ঠী।
বিশ্লেষকদের মতে, আল-সুন্নাহ ইসলামিক স্টেট (আইএস) জিহাদিদের একটি অংশ হিসেবে কাজ করে।
মার্চ মাসে সম্প্রদায়ের উপকূলীয় কেন্দ্রস্থলে সাম্প্রদায়িক গণহত্যায় শত শত আলাউইত নিহত হন।
দামেস্কের পক্ষ থেকে সিরিয়ার সমস্ত সম্প্রদায়কে সুরক্ষিত রাখার আশ্বাস দেওয়া সত্ত্বেও, নতুন কর্তৃপক্ষের অধীনে দেশটির সংখ্যালঘুরা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন।