বাসস
  ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:২৩

নতুন কৌশলগত প্রতিরক্ষা চুক্তি করেছে পাকিস্তান ও সৌদি আরব

ঢাকা, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : পাকিস্তান ও সৌদি আরব বুধবার একটি নতুন কৌশলগত প্রতিরক্ষা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। এতে বলা হয়েছে, কোনো এক দেশের ওপর হামলা হলে সেটি উভয় দেশের বিরুদ্ধে আগ্রাসন হিসেবে বিবেচিত হবে।

সৌদি আরবের রিয়াদ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।

সৌদি আরবের প্রতিবেশী রাষ্ট্র কাতারে হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে ইসরাইল হামলা চালানোর কয়েকদিন পর এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হলো। 

উপসাগরীয় দেশগুলোকে চুক্তিটি হতবাক করে দিয়েছে। কারণ দীর্ঘদিন ধরে নিরাপত্তার জন্য দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল হয়ে আছে।

সৌদি প্রেস এজেন্সি কর্তৃক প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার দিকগুলো উন্নত করা এবং যে কোনো ধরনের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যৌথ প্রতিরোধ জোরদার করার লক্ষ্যে এই চুক্তি করা হয়েছে। 

চুক্তিতে বলা হয়েছে যে উভয় দেশের বিরুদ্ধে যে কোনো আগ্রাসন উভয় দেশের ওপরই আগ্রাসন হিসাবে বিবেচিত হবে।

চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ।

এটি এমন এক সময়ে স্বাক্ষরিত হলো, যখন চলতি বছরের মে মাসে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে চার দিনের বড় ধরনের যুদ্ধে উভয় পক্ষের অন্তত ৭০ জন নিহত হয়। 

মিসাইল, ড্রোন ও আর্টিলারি হামলার ওই সংঘাত ছিল ১৯৯৯ সালের পর দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশীর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ যুদ্ধ।

ভারত শাসিত জম্মু-কাম্মিরের পেহেলগ্রামের বাইসরান উপত্যকায় পর্যটকদের ওপর এক প্রাণঘাতী হামলার পর এ সংঘাতের সূত্রপাত ঘটে।

ওই হামলার ঘটনায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত এপ্রিল মাসে সৌদি আরব সফরকালে মাঝপথে সফর সংক্ষিপ্ত করেন। 

ভারত ও পাকিস্তান উভয় পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। দেশ দুটি পরস্পরের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে একে অপরকে অস্থিতিশীল করার জন্য জঙ্গি বাহিনীকে সমর্থন করার অভিযোগ করে আসছে।

সৌদি আরব এ সংঘাত নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বলে মনে করা হয়। দেশটি জনবহুল ভারতে তেলের একটি গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহকারী দেশ হিসেবে বহু বছর ধরে কাজ করে আসছে। 

ভারতের দ্রুত বিকাশমান অর্থনীতি পেট্রোলিয়াম আমদানির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।

ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সৌদি আরব ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম তেল সরবরাহকারী দেশ।

অন্যদিকে পাকিস্তানও দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছে। বর্তমানে প্রায় ২৫ লাখ পাকিস্তানি নাগরিক সৌদি আরবে বসবাস ও কর্মরত বলে ধারণা করা হয়।

এছাড়া, পাকিস্তানের টালমাটাল অর্থনীতিকে সহায়তা করতে দেশটি দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবের অর্থনৈতিক সমর্থনের ওপর নির্ভরশীল।