শিরোনাম
ঢাকা, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : শ্রীলঙ্কার নতুন সরকার সোমবার প্রায় দেড় দশক আগে অবসান হওয়া দেশটিতে প্রায় চার দশক ধরে জাতিগত সংঘাত চলাকালে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ ঘিরে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে। এ সংঘাতে এক লাখেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছিল।
জেনেভা থেকে এএফপি জানায়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিজিতা হেরাথ জেনেভায় মানবাধিকার কাউন্সিলকে জানান, তার সরকার জাতিসংঘের ‘অ্যাকাউন্টেবিলিটি প্রজেক্ট’-এর বিরোধিতা করছে। এ প্রকল্প ভবিষ্যৎ বিচার প্রক্রিয়ার সম্ভাবনার জন্য প্রমাণ সংরক্ষণ করে আসছে।
তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকের নেতৃত্বাধীন এক বছর আগে ক্ষমতায় আসা বামপন্থী সরকার জাতিগত সম্প্রীতি রক্ষা এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্রুুতিবদ্ধ।
কলম্বোর ধারাবাহিক সরকারগুলো নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে যুদ্ধের শেষ মাসগুলোতে অন্তত ৪০ হাজার সংখ্যালঘু তামিল বেসামরিক লোক নিহত হওয়ার অভিযোগে তদন্তের আন্তর্জাতিক আহ্বান এড়িয়ে গেছে। ২০০৯ সালের মে মাসে এ যুদ্ধের অবসান ঘটে।
হেরাথ কাউন্সিলকে নতুন সরকারের অধীনে হওয়া অগ্রগতি লক্ষ্য করার এবং জাতিগতভাবে বিভক্ত এ দেশে সব সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষায় তাদের প্রতিশ্রুতিকে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘সরকার আমাদের ওপরে শ্রীলঙ্কা অ্যাকাউন্টেবিলিটি প্রজেক্টের মতো কোনো বহিরাগত প্রক্রিয়া চাপিয়ে দেওয়ার বিরোধিতা করে। এটি কেবল বিভাজন সৃষ্টি করবে এবং জাতীয় পুনর্মিলনের চলমান প্রক্রিয়াকে জটিল করে তুলবে।’
তবে তিনি নতুন কোনো জাতীয় জবাবদিহি উদ্যোগ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ফলকার তুর্ক যুদ্ধাপরাধে বিশ্বাসযোগ্যভাবে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান এবং অন্যান্য সরকারকে শ্রীলঙ্কার অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান।
তিনি কাউন্সিলের সদস্যদের শ্রীলঙ্কার বিরোধিতা সত্ত্বেও অ্যাকাউন্টেবিলিটি প্রজেক্টকে সমর্থন করতে অনুরোধ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমি অন্য সদস্য রাষ্ট্রগুলোকেও সার্বজনীন এখতিয়ার নীতির অধীনে শ্রীলঙ্কায় সংঘটিত কথিত আন্তর্জাতিক অপরাধের তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করার আহ্বান জানাই।’
১৬ বছর আগে শ্রীলঙ্কায় তামিল টাইগার নেতৃত্বকে চূর্ণ করে দেওয়া হয়, যা ৩৭ বছরের সংঘাতের অবসান ঘটায় এবং সব পক্ষ মিলিয়ে অন্তত ১ লাখ প্রাণহানি ঘটে।
শ্রীলঙ্কার সরকারগুলো ধারাবাহিকভাবে নিজেদের সেনাদের বা প্রতিপক্ষ তামিল টাইগারদের কথিত যুদ্ধাপরাধের স্বাধীন তদন্তের অনুমতি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
তারা এ অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখার জন্য কোনো গ্রহণযোগ্য দেশীয় প্রক্রিয়াও প্রস্তাব করেনি।