শিরোনাম
ঢাকা, ২৭ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : ট্রাম্প প্রশাসন মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি (ফেমা)’র কয়েকজন কর্মীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। মার্কিন গণমাধ্যম জানায়, ঐসব কর্মী প্রকাশ্যে সংস্থার নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করায় প্রশাসন এ ব্যবস্থা নিয়েছে।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায়, ঘূর্ণিঝড় হারিকেন ক্যাটরিনার ২০তম বার্ষিকীতে সোমবার একটি খোলা চিঠি পাঠিয়েছেন ফেমার ১৮০ জন বর্তমান ও প্রাক্তন কর্মচারী। চিঠিতে তারা অভিযোগ করেছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে নেওয়া বাজেট কাটছাঁট, কর্মীদের বিষয়ে নেওয়া সিদ্ধান্ত ও অন্যান্য সংস্কারের কারণে আবার সেই পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে, যার কারণে ২০০৫ সালের হারিকেন মোকাবিলায় ফেমার ভূমিকা ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিল।
চিঠিটি ১৮০ জন পাঠালেও মাত্র ৩৬ জন নিজেদের নাম প্রকাশ করেছেন। বাকিরা প্রতিশোধের ভয়ে পরিচয় গোপন রেখেছেন।
নিউ ইয়র্ক টাইমস মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ই-মেইল পর্যালোচনা করে জানিয়েছে, প্রায় ৩০ জন কর্মচারীকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
ওয়াশিংটন পোস্টের খবর অনুযায়ী, ফেমার কর্মীদের পাঠানো ইমেইলে বলা হয়েছে যে তাদের অবিলম্বে প্রশাসনিক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। এ সময়ে তারা ‘কোনো দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না, তবে বেতন ও অন্যান্য সুবিধা চালু থাকবে।’
এ বছরের জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে আবার ফেরার পর থেকেই ট্রাম্প বারবার বলেছেন, তিনি ফেমা বিলুপ্ত করতে চান এবং রাজ্যগুলোকে ‘নিজেদের সমস্যা নিজেদের সমাধান করতে’ দিতে চান।
তিনি সংস্থাটিকে অদক্ষ বলে অভিযোগ করছেন এবং কোনো প্রমাণ ছাড়াই বলছেন, ফেমা রিপাবলিকান শাসিত রাজ্যগুলোর প্রতি ব্যাপক রাজনৈতিক পক্ষপাত করে।
২০০৫ সালের আগস্টের শেষ দিকে হারিকেন ক্যাটরিনা মার্কিন উপসাগরীয় উপকূলে আঘাত হানে। এতে লুইজিয়ানার নিউ অরলিয়েন্স শহরে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। এই দুর্যোগে ১ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যায় এবং ১০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়।
দুর্যোগে বাড়িঘর ছেড়ে যাওয়া মানুষদের কাছে তৎক্ষণাৎ সাহায্য পৌঁছাতে দেরি হওয়া এবং বিভ্রান্তিকর যোগাযোগের কারণে তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকারের দুর্যোগ মোকাবিলার প্রক্রিয়া তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিল।
এর পরের বছরই প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় উন্নতি আনতে ‘পোস্ট-ক্যাটরিনা ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট রিফর্ম অ্যাক্ট’ (পিকেইএমআরএ) নামে একটি আইন প্রণয়ন করে কংগ্রেস।
সোমবার পাঠানো খোলা চিঠিতে অভিযোগ করা হয়, ‘দুই দশক পরে ফেমা আবার এমন প্রক্রিয়া ও নেতৃত্ব কাঠামো চালু করছে যেসব প্রতিরোধ করার জন্যই পিকেইএমআরএ আইনটি তৈরি করা হয়েছিল।’
চিঠিতে কর্মীরা কংগ্রেসকে অনুরোধ করেছেন যাতে ফেমাকে একটি মন্ত্রিসভা পর্যায়ের স্বাধীন সংস্থায় পরিণত করা হয় এবং ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বরখাস্ত’ থেকে এটিকে রক্ষা করা হয়।
মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েমের ব্যয় সংক্রান্ত বিধিনিষেধ চালুর কারণে ফেমা’র ‘দ্রুত কাজ করার ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব কমে গেছে’ বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
নোয়েম নির্দেশ দিয়েছেন, ১ লাখ ডলারের বেশি মূল্যের প্রতিটি ফেমা চুক্তি, অনুদান ও কাজ নিজে যাচাই করবেন।
চিঠিতে আরো বলা হয়, ‘জুলাই ২০২৫-এ টেক্সাসের কেরভিলে বন্যার সময় এই নিজস্ব যাচাই প্রক্রিয়ার প্রভাব ভীষণভাবে দেখা গেছে। তখন কাজ শুরু করতে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত দেরি হয়।’
চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে, বাজেট কাটছাটের কারণে এই বছর ফেমা’র এক-তৃতীয়াংশ পূর্ণকালীন কর্মচারি চাকরি ছেড়েছেন। মূলত ধনকুবের ইলন মাস্কের নেতৃত্বে পরিচালিত ‘ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি’র বাজেট কমানোর নির্দেশনার কারণেই এমনটা হয়েছে।