বাসস
  ২৫ আগস্ট ২০২৫, ২১:০৫

নির্দোষ ব্যক্তিকে আটক রাখায় মৃত্যুতে ক্ষমা চাইলো জাপান পুলিশ

ঢাকা, ২৫ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : জাপানে ভুলক্রমে নির্দোষ এক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করে কয়েক মাস ধরে আটক রাখায় মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

টোকিও থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি একথা জানিয়েছে। 

ওহকাওয়ারা কাকোহকি মেশিনারি ফার্মের সাবেক উপদেষ্টা শিজুও আইশিমা ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির তিনজন নির্বাহীর একজন। বিচারের আগে কয়েক মাস ধরে তাদের বেআইনিভাবে আটক রাখা হয়। অথচ, বিচারে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ খারিজ হয়ে যায়।

মানবাধিকারকর্মীরা দীর্ঘদিন ধরেই জাপানে জিম্মি রেখে বিচার প্রথা অবসানের দাবি জানিয়ে আসছেন। দেশটিতে তদন্তকারীরা জোরপূর্বক  স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য দীর্ঘ সময় ধরে বিচারের আগে অভিযুক্তকে আটকে রাখেন।

সোমবার টোকিও পুলিশ, শীর্ষ সরকারি আইনজীবী বিভাগ এবং টোকিও প্রসিকিউটর অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আইশিমার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন এবং তার সমাধিস্থল পরিদর্শনে গেছেন।

আইশিমার পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাতকারে টোকিও মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট জেনারেল তেতসুরো কামাতা বলেন, ‘বেআইনিভাবে গ্রেপ্তার ও তদন্তের ঘটনায় আমরা আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থী।’

আইশিমার স্ত্রী বলেন, ‘আমি আপনাদের ক্ষমা প্রার্থনা গ্রহণ করলাম। কিন্তু আমি ক্ষমা করতে পারব না।’

২০২০ সালের মার্চে ওই তিন জনকে আটক করা হয়েছিল এবং তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল যে, তারা অবৈধভাবে জৈব অস্ত্র তৈরিতে সক্ষম স্প্রে রপ্তানি করেছে। অথচ, এটি বৈধ ছিল বলে তারা দাবি করেছে।

২০২০ সালের অক্টোবরে আইশিমার ক্যান্সার ধরা পড়ে। কিন্তু প্রসিকিউটররা তাকে আটকে রাখেন এবং যুক্তি দেখান যে, ছাড়া পেলে তিনি প্রমাণ নষ্ট করতে পারেন। এর এক মাস পরই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে তার দুই সহকর্মীকে জামিন দেওয়া হয়। তবে তাদের শর্ত দেওয়া হয়, তারা আইশিমার সঙ্গে দেখা করতে পারবে না। ওই মাসে আইশিমার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সহকর্মীদের সঙ্গে তাকে সাক্ষাত করতেও দেওয়া হয়নি।

পরে প্রসিকিউটররা অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেন। এরপর আইশিমার পরিবার ও সহকর্মীরা পুলিশের বিরুদ্ধে মামলার সুযোগ পান।

টোকিও হাইকোর্ট এই ঘটনার তদন্ত, গ্রেপ্তার এবং অভিযোগ দায়ের প্রক্রিয়া অবৈধ এবং এক্ষেত্রে কোনো প্রমাণ নেই বলে জানিয়েছে।