শিরোনাম
ঢাকা, ২৫ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, মঙ্গলবার জেনেভায় ইরান ও ইউরোপীয় তিন দেশ-ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির মধ্যে পরমাণু আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।
তেহরান থেকে এএফপি জানায়, রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সোমবার জানিয়েছে, মঙ্গলবার ইরান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী ইউরোপের তিন দেশ জেনেভায় নতুন করে উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক করবে। আগের দফার আলোচনা ২৫ জুলাই ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত হয়।
জুনের মাঝামাঝি সময়ে ইসরাইলের সঙ্গে ইরানের ১২ দিনের যুদ্ধের পর এটি হবে দ্বিতীয় বৈঠক। ওই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র তেহরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোতে হামলা চালায়। ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে ইরান জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষণ সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা কার্যক্রম স্থগিত করার পর এই বৈঠক হতে যাচ্ছে। ইরানরে পরমাণু স্থাপনাগুলোতে ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার ব্যর্থতার দিকে ইঙ্গিত করে এ সহযোগিতা কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।
১২ দিনের যুদ্ধে ইসরাইলের নজিরবিহীন বোমা হামলা এবং ইরানের প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ ওয়াশিংটনের সঙ্গে তেহরানের পরমাণু আলোচনা ব্যাহত করে।
ইউরোপীয় তিন দেশ ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির অধীনে ‘স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম’ চালু করার হুমকি দিয়েছে, যা চুক্তির আওতায় প্রত্যাহারকৃত জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনরায় আরোপ করা হবে। ইরান এর ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কমানো এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-এর পরিদর্শকদের সঙ্গে সহযোগিতা পুনরুদ্ধার করতে সম্মত না হলে এ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ইরান এই ধারা প্রয়োগের বৈধতার সমালোচনা করে ইউরোপীয়দের বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে।
২০১৫ সালে ইরান বিশ্বের ছয়টি পরাশক্তির সঙ্গে তার পরমাণু কর্মসূচি সংক্রান্ত একটি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে আসতে সম্মত হয়। চুক্তিটি জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) নামে পরিচিত। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, চীন এবং রাশিয়া, অর্থাৎ পি ফাইভ প্লাস ওয়ান নামে পরিচিত পরাশক্তিগুলো ছিল এই চুক্তির অংশীদার।
চুক্তিটির ফলে কিছু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের শর্তে ইরান এর পরমাণু কার্যক্রম সীমিত করে। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালে তার প্রথম মেয়াদে একতরফাভাবে ইরানের তেল রপ্তানি ও ব্যাংকিং খাতের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ফলে ইরান এর নিজস্ব প্রতিশ্রুতি, বিশেষ করে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ সীমিত করা থেকে সরে আসতে শুরু করে।
২০১৫ সালের চুক্তিতে বলা হয়, যদি ইরান তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়,তবে ‘স্ন্যাপব্যাক’ নামে পরিচিত এক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনরায় আরোপ করা হবে।
চুক্তির তিনটি ইউরোপীয় পক্ষ বৃটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি হুঁশিয়ারি দিয়েছে, ইউরোপের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়লে তারা এই স্ন্যাপব্যাক প্রক্রিয়া সক্রিয় করবে।
স্ন্যাপব্যাক প্রক্রিয়া সক্রিয় করার সময়সীমা অক্টোবরে শেষ হচ্ছে। তবে ফিনান্সিয়াল টাইমস জানায়, ইরান ওয়াশিংটনের সঙ্গে পরমাণু আলোচনা পুনরায় শুরু করলে এবং আইএইএ-এর সঙ্গে পুনরায় যুক্ত হলে ইউরোপীয়রা সময়সীমা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে।
এ বিষয়ে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেন, ইউরোপীয়দের এটি (স্ন্যাপব্যাক) করার কোনও অধিকার নেই।