শিরোনাম
ঢাকা, ২৮ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সোমবার আফ্রিকার খাদ্য শীর্ষ সম্মেলনে এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, ‘ক্ষুধাকে কখনোই যুদ্ধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা উচিত নয়।’
আদ্দিস আবাবা থেকে এএফপি জানায়, তিনি সতর্ক করেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও সংঘাত গাজা থেকে শুরু করে সুদান পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলেছে। বর্তমানে শুধু আফ্রিকাতেই ২৮ কোটি মানুষ খাদ্য সংকটে ভুগছে।
গুতেরেস বলেন: ‘ক্ষুধা অস্থিতিশীলতা বাড়ায় এবং শান্তি বিনষ্ট করে। আমরা কখনোই একে যুদ্ধের হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণ করতে পারি না।’
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ফসল, সরবরাহ শৃঙ্খল ও মানবিক সহায়তা ব্যবস্থা ব্যাহত করছে। গাজা ও সুদানে চলমান সংঘর্ষ দ্রুত ক্ষুধার বিস্তার ঘটাচ্ছে। গাজার অবরুদ্ধ জনগণ দুর্ভিক্ষ ও মারাত্মক অপুষ্টির ঝুঁকিতে রয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, মার্চ থেকে গাজায় পূর্ণ অবরোধ শুরু হলে অপুষ্টির ‘ভয়াবহ মাত্রা’ দেখা দেয়। যদিও মে মাসে অল্প সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়, ১০০টির বেশি এনজিও সতর্ক করেছে যে সেখানে ‘গণ-অনাহার’ ছড়িয়ে পড়ছে।
আফ্রিকান ইউনিয়নের নির্বাহী কমিশনের প্রধান মাহমুদ আলী ইউসুফ বলেন: ‘আফ্রিকাজুড়ে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা বাড়ছে। এর জন্য দায়ী জলবায়ু বিপর্যয়, সংঘাত ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা।’
তিনি আরও বলেন: ‘৩.৪ মিলিয়ন মানুষ বর্তমানে দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি। খরা, বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ে ১০ মিলিয়নের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত’
ইউসুফের আহ্বান জানান, এইউ সদস্য রাষ্ট্রগুলো যেন তাদের জিডিপির ১০ শতাংশ কৃষিতে বরাদ্দ দেয়।
আন্তর্জাতিক অংশীদারদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন: ‘আমরা একা পারব না। আপনাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করুন আর্থিক সহায়তা দিন, আফ্রিকান সমাধানে পাশে দাঁড়ান।’
জাতিসংঘ অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-এর আঞ্চলিক পরিচালক উসমান বেলবেইসি বলেন: ‘সুদান বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট চরমে, কিন্তু তা সবচেয়ে কম আলোচিত।’
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদান সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান ও আধাসামরিক বাহিনী প্রধান দাগলো’র মধ্যে সংঘর্ষে লিপ্ত রয়েছে। এতে দশ হাজারের বেশি মানুষ নিহত ও ৭০ লাখের বেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
গুতেরেস ও আফ্রিকান নেতারা খাদ্যকে কখনোই রাজনীতি বা সংঘাতের অস্ত্র না বানানোর দৃঢ় আহ্বান জানান, বরং সমন্বিত বৈশ্বিক সহায়তা ও দায়িত্বশীলতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।