শিরোনাম
ঢাকা, ২০ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : ভিয়েতনামের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হা লং উপসাগরে পর্যটকবাহী একটি ফেরি ডুবে যাওয়ার ঘটনায় শনিবার অন্তত ৩৭ জন প্রাণ হারিয়েছে।
রোববার পর্যন্ত এ ঘটনায় ৫ জন নিখোঁজ রয়েছে বলে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে।
ভিয়েতনামের হা লং বে থেকে ‘ওয়ান্ডার সি’ নামক পর্যটকবাহী নৌযানটি শনিবার আকস্মিক ঝড়ের কবলে পড়ে উল্টে যায়। নৌযানটিতে ৪৮ জন যাত্রী ও নৌযানটির ৫ জন ক্রু ছিলো বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ভিএন এক্সপ্রেস জানিয়েছে।
অধিকাংশ যাত্রীই পরিবারের সঙ্গে হানয় থেকে এই পর্যটন কেন্দ্রে এসেছিল। এই পর্যটকদের মধ্যে ২০ জনেরও বেশি শিশু ছিল।
শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১১ জনকে জীবিত উদ্ধার এবং ৩৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
পরে রাতে ফেরির কেবিন থেকে তিন ক্রুর লাশ উদ্ধার করা হয়।
এই দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া ১০ বছরের একটি শিশু ভিয়েতনাম নেটকে বলে, আমি গভীর শ্বাস নিয়ে একটি ফাঁকা জায়গা দিয়ে সাঁতরে ও ডুব দিয়ে ওপরে উঠে আসি।
তারপর সাহায্যের জন্য চিৎকার করি। তখন সৈন্যদের একটি নৌকা আমাকে টেনে তোলে।
প্রধানমন্ত্রী ফাম মিন চিন শনিবার এই ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে সমবেদনা জানান এবং জরুরি উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রতিরক্ষা ও জননিরাপত্তা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন।
সরকার জানিয়েছে, ঘটনার কারণ অনুসন্ধান ও দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা ত্রান ত্রং হুং এএফপি’কে বলেন, ‘দুপুর ২টার দিকে আকাশ হঠাৎ অন্ধকার হয়ে যায়। বড় আকারের শিলাবৃষ্টি, প্রবল বৃষ্টি, বজ্রপাত ও বিদ্যুৎ চমক দেখা যায়।’
হানয়সহ উত্তরাঞ্চলীয় থাই নগুয়েন ও বাক নিন প্রদেশেও প্রবল বৃষ্টিপাত হয়। রাজধানীতে প্রবল বাতাসে বহু গাছ উপড়ে পড়ে। এই ঝড়ের আগে কয়েকদিন তীব্র তাপদাহ বিরাজ করছিল। কিছু এলাকায় তাপমাত্রা ছিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৯৯ ডিগ্রি ফারেনহাইট)।
ভিয়েতনামের আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মাই ভ্যান খিয়েম ভিএন এক্সপ্রেসকে বলেন, এই বজ্রঝড় দক্ষিণ চীন সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় উইফা’র কারণে হয়নি। উইফা রোববার দক্ষিণ চীন সাগরে প্রবেশ করে শক্তি সঞ্চয় করছে এবং আগামী সপ্তাহের শুরুতে ভিয়েতনামে আঘাত হানতে পারে।
উল্লেখ্য, হা লং উপসাগর ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান এবং প্রতি বছর লাখ লাখ পর্যটক এই এলাকা পরিদর্শনে আসে।
গত বছর টাইফুন ইয়াগির আঘাতে হা লং উপসাগরের কোয়াং নিং প্রদেশে ৩০টি নৌযান ডুবে যায়।
এ মাসের শুরুতেই ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপের কাছে আরেকটি ফেরি ডুবে অন্তত ১৮ জনের মৃত্যু হয়।