বাসস
  ১৮ জুলাই ২০২৫, ১৯:৩৬

অর্থ সংকটে ১ কোটি ১৬ লাখ শরণার্থীর মানবিক সহায়তা ঝুঁকিতে : জাতিসংঘ

ঢাকা, ১৮ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : বিশ্বব্যাপী মানবিক সহায়তা বাজেটে ব্যাপক কাটছাঁটের কারণে এককোটির বেশি শরণার্থী তাদের অত্যাবশ্যক সহায়তা হারানোর ঝুঁকিতে পড়েছেন বলে শুক্রবার সতর্ক করেছে জাতিসংঘ।

জেনেভা থেকে এএফপি জানায়, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, ২০২৪ সালে তারা যে সংখ্যক শরণার্থী ও বাস্তুচ্যুত মানুষকে সহায়তা করেছিল, এবারের এই সংকট তার এক-তৃতীয়াংশকে প্রভাবিত করতে পারে।

একটি নতুন প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানিয়েছে, বৈশ্বিক শরণার্থী সংকটের পেছনে রয়েছে এক ভয়াবহ সমন্বয়: ‘উর্ধ্বমুখী বাস্তুচ্যুতি, হ্রাসমান তহবিল এবং রাজনৈতিক উদাসীনতা।’

ইউএনএইচসিআরের প্রধান বহিঃসম্পর্ক বিষয়ক কর্মকর্তা ডমিনিক হাইড বলেন, ‘আমরা এখন এক মরণঘাতী ককটেলের মুখোমুখি... আমরা বিশ্বজুড়ে শরণার্থী ও বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর জন্য অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।’

যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশের বাজেট কর্তনের ফলে জাতিসংঘ এবং অন্যান্য মানবিক সংস্থাগুলো বড় ধরনের অর্থ ঘাটতির মুখে পড়েছে।

এ বছর ইউএনএইচসিআর-এর প্রয়োজনীয় বাজেট ছিল ১০.৬ বিলিয়ন ডলার, কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা পেয়েছে মাত্র ২৩ শতাংশ অর্থ।

ফলে, সংস্থাটি ইতোমধ্যে প্রায় ১.৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের জরুরি সহায়তা কার্যক্রম বাতিল বা স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে।

ডমিনিক হাইড বলেন, ‘ফলে, ১ কোটি ১৬ লাখ শরণার্থী এবং বাস্তুচ্যুত মানুষ ইউএনএইচসিআর-এর সহায়তা থেকে বঞ্চিত হতে পারে।’

এই পরিস্থিতিতে বহু পরিবারকে শিশুদের খাওয়ানো, ওষুধ কেনা এবং বাসা ভাড়ার মধ্যে যেকোনো একটি বেছে নিতে হচ্ছে।

সুদানে যুদ্ধ থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থীদের পুষ্টিহীনতার হার ভয়াবহ। চাদে অবস্থানরত শিশুদের জন্য পুষ্টি পরীক্ষাও স্থগিত রাখা হয়েছে।

চাদ এবং দক্ষিণ সুদানের সীমান্তে নতুন আগতদের নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর কার্যক্রমও বন্ধ করতে হয়েছে, ফলে হাজার হাজার মানুষ দুর্গম এলাকায় আটকে পড়েছে।

বাংলাদেশে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর জন্য পরিচালিত ক্যাম্পগুলোতে ২ লাখ ৩০ হাজার শিশু ঝুঁকির মুখে, তাদের শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত হতে পারে।

লেবাননে ইউএনএইচসিআর-এর পুরো স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চলতি বছরের শেষে সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

গত মাসে ইউএনএইচসিআর ঘোষণা করেছে, তারা বাজেট সংকটের কারণে বিশ্বজুড়ে তাদের প্রায় ৩,৫০০ জন কর্মী ছাঁটাই করবে — যা মোট জনবলের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ।