বাসস
  ০৯ জুলাই ২০২৫, ১৬:২৪

আগস্ট সময়সীমা বাড়ছে না, কপারে আসছে ৫০ শতাংশ শুল্ক: ট্রাম্প 

ঢাকা, ৯ জুলাই, ২০২৫ (বাসস): মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার বলেছেন, তিনি ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হতে যাওয়া নতুন উচ্চ হারে শুল্ক আরোপের সময়সীমা আর বাড়াবেন না। সেই সঙ্গে তিনি কপার (তামা) আমদানির ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক বসানোর ঘোষণা দিয়েছেন।

ওয়াশিংটন থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, কপার আমদানির ওপর পরিচালিত একটি তদন্তের পর মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে ট্রাম্প বলেছেন যে আজ আমরা কপারে যাচ্ছি। আমি মনে করি কপারে আমরা ৫০ শতাংশ শুল্ক বসাব। এটি ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে ফেরার পর থেকে খাতভিত্তিক শুল্ক বৃদ্ধির একটি বড় ধারার অংশ।

বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিক সিএনবিসিকে জানান, এই হার জুলাইয়ের শেষ নাগাদ অথবা ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হতে পারে।

ট্রাম্প আরও জানান, ওষুধ খাত নিয়েও খুব শিগগিরই ঘোষণা আসবে। তবে উৎপাদকদের তাদের কার্যক্রম যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তরের জন্য প্রায় এক থেকে দেড় বছর সময় দেওয়া হবে। এই সময়ের পর তারা বিশাল হারে শুল্কের মুখে পড়বে। তা প্রায় ২০০ শতাংশের মতো।

কপার ও ফার্মাসিউটিক্যালস ছাড়াও ট্রাম্প কাঠ, সেমিকন্ডাক্টর এবং গুরুত্বপূর্ণ খনিজ আমদানির ওপরও তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন, যা ভবিষ্যতে আরও শুল্ক বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিচ্ছে।

লুটনিক জানান, ফার্মাসিউটিক্যাল ও সেমিকন্ডাক্টরের ওপর মার্কিন গবেষণা জুলাইয়ের শেষ নাগাদ শেষ হবে। এর পরেই ট্রাম্প নীতিনির্ধারণ করবেন। খাতভিত্তিক শুল্কের বাইরেও, ট্রাম্প এপ্রিল মাসে প্রায় সব বাণিজ্য অংশীদারদের পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলেন।

এই শুল্কগুলো ইইউ ও জাপানের মতো ডজনখানেক অর্থনীতির ওপর আরও বাড়ার কথা থাকলেও ট্রাম্প সেগুলোর কার্যকারিতা ৯ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করেছিলেন।

তবে তিনি এবার পুনরায় সেগুলোর বাস্তবায়ন পিছিয়ে দিয়ে ১ আগস্টে নির্ধারিত করেছেন এবং স্পষ্ট করে বলেছেন, আর কোনো সময় বাড়ানো হবে না।

ট্রাম্প  ট্রুথ সোশ্যাল এ লিখেছেন,  কোনো সময়সীমা আর বাড়ানো হবে না। কোনো পরিবর্তন হবে না।

যদিও সোমবার রাতে সাংবাদিকদের তিনি বলেছিলেন, ১ আগস্টের সময়সীমা দৃঢ়, তবে শতভাগ নয়।

নতুন বাণিজ্য চুক্তির লক্ষ্যে ট্রাম্প সোমবার আরও এক ডজন অংশীদারকে চিঠি পাঠান, যার মধ্যে রয়েছে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো মার্কিন মিত্র।

চিঠিতে তিনি জানান, এই দেশগুলোর পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। লাওস ও কম্বোডিয়ার মতো কিছু দেশে অবশ্য হারের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম থাকবে।

ট্রাম্প এই চিঠিগুলোর মাধ্যমে সতর্ক করেন, তার শুল্কের জবাবে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নিলে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

লুটনিক জানান, আগামী দুই দিনের মধ্যে আরও ১৫ থেকে ২০টি চিঠি পাঠানো হতে পারে।

দুই দিন পর ইউরোপেও: ট্রাম্প জানান, বড় অঙ্কের রাজস্ব ১ আগস্ট থেকেই আসা শুরু হবে। মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট জানান, বছরের শেষে শুল্ক রাজস্ব ৩০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

ট্রাম্প প্রশাসন বর্তমানে তাদের শুল্ক হুমকির পরপরই নতুন চুক্তি সম্পাদনের প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়নের চাপে রয়েছে।

এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র কেবল যুক্তরাজ্য ও ভিয়েতনামের সঙ্গে চুক্তি করেছে। আর চীনের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি শুল্ক কমাতে একটি সমঝোতায় পৌঁছেছে।

লুটনিক জানান, আগস্টের শুরুতে চীনের সঙ্গে বড় ধরনের বাণিজ্য আলোচনা শুরু হবে। এতে বেসেন্ট ও মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার অংশ নেবেন।

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম নিয়ে আলোচনাও চলমান।

সম্প্রতি ট্রাম্প উভয় পণ্যের ওপর মার্কিন শুল্ক দ্বিগুণ করে ৫০ শতাংশ করেছেন। তবে যুক্তরাজ্য এই বৃদ্ধির বাইরে ছিল। কিন্তু আগামীকাল বুধবার থেকে যদি যুক্তরাজ্য চুক্তির শর্ত মানছে না বলে প্রমাণিত হয়, তাহলে এই শুল্কও দ্বিগুণ হতে পারে।

ট্রাম্প এইসব শুল্ক বৃদ্ধির কারণ হিসেবে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্যে পারস্পরিকতা না থাকার বিষয়টি তুলে ধরেন।