শিরোনাম
ঢাকা, ৯ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে আলোচনার সময় গাজায় জিম্মিদের মুক্তির বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং হামাসকে পরাজিত করার জন্য চলমান সামরিক অভিযান নিয়ে আলোচনা করেছেন।
জেরুজালেম থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
মঙ্গলবারের এই বৈঠকটি ছিল দুই নেতার মধ্যে ২৪ ঘন্টার মধ্যে দ্বিতীয় বৈঠক।
একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য ট্রাম্প নেতানিয়াহুর ওপর চাপ বাড়িয়েছিলেন, যাতে গাজা যুদ্ধের ‘ট্র্যাজেডি’র অবসান ঘটানো যায়।
নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে বলেছেন, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনার সময় ইসরাইলের উদ্দেশ্য পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তিনি বলেছেন, ‘আমরা আমাদের জিম্মিদের মুক্তির প্রচেষ্টার ওপর মনোনিবেশ করেছি।’
তিনি বলেন, আমরা এক মুহূর্তের জন্যও দমে যাচ্ছি না এবং আমাদের বীর সৈন্যদের অব্যহত সামরিক অভিযান বাড়ানোর কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, জিম্মিদের জীবিত উদ্ধার ও মৃতদের লাশ ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি হামাসের সামরিক ও শাসন ক্ষমতা নির্মূল করে গাজা যেন আর কখনই ইসরাইলের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে না পারে, এটা নিশ্চিত করাই আমাদেল লক্ষ্য।
নেতানিয়াহু বলেছেন, অব্যহত সামরিক অভিযান অপরিহার্য ছিল, যদিও এর জন্য আমাদের উচ্চ মূল্য দিতে হয়েছে। মঙ্গলবার উত্তর গাজায় পাঁচ ইসরাইলি সৈন্য নিহত হয়েছেন।
ট্রাম্প ইসরাইলের প্রতি দৃঢ় মার্কিন সমর্থন অব্যাহত রেখেছেন। বিশেষ করে সাম্প্রতিক ইরান-ইসরাইল যুদ্ধের সময়।
তবে তিনি গাজায় যুদ্ধ শেষ করার জন্য চাপও বাড়িয়েছেন।
গাজার বর্তমান পরিস্থিতিকে ট্রাম্প ‘নরক’ বলে অভিহিত করেছেন।
মার্কিন নেতার বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ মঙ্গলবার বলেছেন, তিনি ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে একটি চুক্তির বিষয়ে আশাবাদী।
এই সপ্তাহের শেষের দিকে কাতারে তারা পরোক্ষ আলোচনায় যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
কিন্তু মিশর ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার বলেছে, আলোচনায় একটি অগ্রগতির জন্য আরো সময় প্রয়োজন।
গাজার নাগরিক প্রতিরক্ষা বুধবার জানিয়েছে, সর্বশেষ সহিংসতায়, খান ইউনিসে বাস্তুচ্যুতদের একটি তাঁবু এবং ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের উত্তরে একটি শিবিরে রাতভর দুটি ইসরাইলি বিমান হামলায় ছয় শিশু সহ ২০ জন নিহত হয়েছে।
ইসরাইলি সরকারি পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে এএফপির হিসাব অনুযায়ী জানা গেছে, গত ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরাইলের ওপর আক্রমণের ফলে গাজায় যুদ্ধ শুরু হয়। এ যুদ্ধে ১ হাজার ২শ’ ১৯ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক লোক।
ইসরাইলের ওপর হামাসের হামলার সময় আটক ২৫১ জন জিম্মির মধ্যে ৪৯ জন এখনো গাজায় বন্দি, ইসরাইলি সেনাবাহিনী বলেছে ওই বন্দিদের মধ্যে ২৭ জন মারা গেছে।
হামাস-নিয়ন্ত্রিত ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ইসরাইলের প্রতিশোধমূলক অভিযানে গাজায় কমপক্ষে ৫৭ হাজার ৫শ’ ৭৫ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক লোক।
জাতিসংঘ এই পরিসংখ্যানকে নির্ভরযোগ্য বলে মনে করে।