শিরোনাম
ঢাকা, ৫ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেজেপ তাইয়িপ এরদোয়ান শনিবার বলেছেন, কুর্দি বিদ্রোহী গোষ্ঠী পিকেকে অস্ত্র অস্ত্র সমর্পণ শুরু করলে কুর্দিদের সঙ্গে শান্তি প্রচেষ্টা আরও বেগবান হবে।
পিকেকে জানিয়েছে তারা ১০ থেকে ১২ জুলাইয়ের মধ্যে ইরাকি কুর্দিস্তানে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অস্ত্র ধ্বংস করা শুরু করতে পারে এমন ঘোষণার পর এরদোয়ান এ মন্তব্য করলেন।
ইস্তাম্বুল থেকে এএফপি জানায়, আজারবাইজানে একটি অর্থনৈতিক সম্মেলন শেষে ফেরার পথে শনিবার আনাদোলু রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থাকে তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসী সংগঠনটি অস্ত্র সমর্পণের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন শুরু করলে এই প্রক্রিয়া আরও খানিকটা গতি পাবে।’
পিকেকে গত মে মাসে তাদের সশস্ত্র আন্দোলনের অবসান ঘোষণা করে। কুর্দিস্তানে পিকেকের সঙ্গে সংঘাত ১৯৮৪ সাল থেকে ৪০ হাজারের বেশি প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এবং তুরস্কের কুর্দি জনগণ ও আঞ্চলিক প্রতিবেশীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে সম্পর্ক বিঘ্নিত করে রেখেছে।
পিকেকের এক কমান্ডার সোমবার এএফপিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘সদ্যকার লড়াইয়ে অংশ নেওয়া কিছু যোদ্ধা সদিচ্ছার নিদর্শন হিসেবে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের অস্ত্র ধ্বংস বা পুড়িয়ে ফেলবে।’
এরদোয়ান বলেন, তিনি কুর্দিপন্থী ডিইএম দলের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন, যারা কারাবন্দী পিকেকে প্রতিষ্ঠাতা আবদুল্লাহ ওজালানের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আঙ্কারা ও গোষ্ঠীটির মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসমুক্ত তুরস্ক গড়ার লক্ষ্যে এখন পর্যন্ত যা কিছু হয়েছে এবং সামনে কী হতে পারে আমরা তা ডিইএম প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করব।’
তবে এই আলোচনার নির্দিষ্ট তারিখ এখনও নির্ধারিত হয়নি বলে জানান তিনি। ইঙ্গিত দেন, তুরস্কের গোয়েন্দা প্রধান ইব্রাহিম কালিনও বৈঠকে অংশ নেবেন।
গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, ডিইএমের দুই নেতা পারভিন বুলদান ও মিসাত সানচার সম্ভবত আগামী সপ্তাহের শুরুতে এরদোয়ানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন, এরপর তারা ওজালানকে ব্রিফ করতে ইস্তাম্বুলের কাছে ইমরালি কারাগারে যাবেন। ১৯৯৯ সাল থেকে ওজালান ওই কারাগারে যাবজ্জীবন দণ্ডে বন্দি।
এরদোয়ান আরও বলেন, ‘যখন অস্ত্র, রক্ত আর অশ্রুর সম্পূর্ণ অবসান হবে, তখন আমাদের সামনে একটি একেবারে নতুন দুয়ার খুলে যাবে। পিকেকের নিরস্ত্রীকরণ তুরস্কের জন্য নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে এক নতুন যুগের সূচনা হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে কাজ করব কীভাবে সারা দেশে, বিশেষ করে পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব আনাতোলিয়ায়, একটি সন্ত্রাসমুক্ত তুরস্ক গড়া যায়।’
তবে এর আগে এই সপ্তাহেই পিকেকের শীর্ষ কর্মকর্তা মুস্তাফা কারাসু অভিযোগ করেন, আঙ্কারা পারস্পরিকভাবে প্রত্যাশিত পদক্ষেপ নেয়নি।
তিনি বলেন, পিকেকে অবস্থানে হামলা অব্যাহত থাকা এবং ওজালানের কারাগার পরিস্থিতির উন্নয়ন না হওয়া এর প্রমাণ।