বাসস
  ১২ আগস্ট ২০২৫, ১৪:৫৮
আপডেট : ১২ আগস্ট ২০২৫, ১৫:২৭

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বন্যার পরিস্থিতি অবনতি, হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী

ছবি: বাসস

চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ১২ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : ফারাক্কার বাঁধ খুলে দেয়ায় ভারত থেকে নেমে আসা উজানের ঢল আর টানা বৃষ্টিতে পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। 

এতে জেলা সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চলের প্রায় ৯ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

এসব এলাকায় ব্যাপক পরিমাণ ফসলি জমিও পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এছাড়া ৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ও শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকে যাওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে পাঠদানও। ফলে ওইসব এলাকার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি স্বাভাবিক জীবনযাত্রাও ব্যাহত হচ্ছে।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, গত ১৫ ঘণ্টার ব্যবধানে পদ্মায় পানি বেড়েছে ৫ সেন্টিমিটার। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় পদ্মায় ২১ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তবে বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে।

জানা গেছে, সদর উপজেলা দুটি ও শিবগঞ্জ উপজেলার তিন মোট ৫টি ইউনিয়নের প্রায় ৮ হাজার পরিবার পানিবন্দী রয়েছেন। এর মধ্যে সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের ৭০০ ও আলাতুলি ইউনিয়নের ৬০০ পরিবার পানিবন্দি। এছাড়া শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের ৩ হাজার পরিবার, উজিরপুর ইউনিয়নের ৪৫০ ও দুর্লভপুর ইউনিয়নের ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে জীবন পার করছেন।

পদ্মা নদীর পানি উপচে ফসলি জমি ডুবে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কৃষক। এর মধ্যে সদর উপজেলার ৪৩ হেক্টর ও শিবগঞ্জ উপজেলার ৩৬০ হেক্টর ফসলের ক্ষতি হয়েছে বলে জানান, উপজেলা দুটির কৃষি কর্মকর্তারা।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘পদ্মা নদীতে পানি বাড়ায় নিম্নাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দী রয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। শিবগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চলের মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

এসব মানুষের তালিকা প্রস্তুতের জন্য উপজেলাগুলোয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তালিকা পেলে যাচাই-বাছাই করে তাদের ত্রাণের আওতায় আনা হবে। 
গতকাল সোমবার শিবগঞ্জ উপজেলার প্রায় তিন শতাধিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে শুকনো খাবার ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে।

শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজাহার আলী জানান, পানিবন্দী মানুষজনকে উদ্ধার,শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। তিনি আজ দুপুরে জানান, উপজেলায় প্রায় সাড়ে ৭ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। শিবগঞ্জ থেকে বোগলাউড়ি পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার পাকা সড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে গত ৩ দিন থেকে। 

পিঠালিতলা বিলে পানি প্রবেশ করায় কয়েক হাজার বিঘা জমির ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে।