বাসস
  ০৩ জুন ২০২৫, ২১:১৩

নাইজেরিয়ায় বন্যায় মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে

ঢাকা, ৩ জুন, ২০২৫ (বাসস) : নাইজেরিয়ার উত্তর-মধ্যাঞ্চলে গত সপ্তাহে আকস্মিক বন্যায় প্রাণহানি দুইশ’ ছাড়িয়েছে। আরও শতাধিক মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন এবং তাদের জীবন নিয়েও শঙ্কা রয়েছে।

নাইজার রাজ্যের মানবিক কমিশনারের বরাতে মঙ্গলবার আবুজা থেকে এএফপি জানায়, বৃহস্পতিবার রাতভর বৃষ্টিপাতের ফলে মোকওয়া শহরটি আকস্মিক বন্যায় মারাত্মভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে এক সকালেই ২৫০ টিরও বেশি বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে এবং শহরের একাংশ তলিয়ে গেছে।

এর আগে বন্যায় ১৫০ জনের প্রাণহানি এবং অনেকেই নিখোঁজ রয়েছে বলে জানানো হয়।

মঙ্গলবার আহমেদ সুলেমান নাইজেরিয়ান সম্প্রচারমাধ্যম চ্যানেলস টেলিভিশনকে বলেন, আমাদের কাছে দুইশ’রও বেশি মরদেহ আছে। নাইজার রাজ্যে হতাহতের সংখ্যা এখনই কেউ বলতে পারবে না। কারণ মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। আমরা এখনও অনুসন্ধান চালাচ্ছি। সত্যি বলতে, হতাহতের সংখ্যা আমরা নিশ্চিত হতে পারছি না।

জলবায়ু পরিবর্তন নাইজেরিয়ায় আবহাওয়ার পরিবর্তনকে আরও খারাপ করে তুলেছে। তবে মোকওয়ার অধিবাসীরা বলেছেন, মানবসৃষ্ট কারণও এর পেছনে দায়ী।

অধিবাসীরা এএফপিকে জানিয়েছেন, শহরের পাশে বয়ে যাওয়া একটি পরিত্যক্ত রেলপথের পেছনে কয়েকদিন ধরে পানি জমে ছিল। সাধারণত এ পানি কয়েকটি কালভার্ট পেরিয়ে একটি সরু খালে চলে যেত। কিন্তু কালভার্টগুলোর ধ্বংসাবশেষ পানি আটকে রাখে। যথাযথ পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার অভাবে এ বন্যা সৃষ্টির একটি কারণ হতে পারে।

অপর্যাপ্ত নিষ্কাশন ব্যবস্থা, জলপথ বাধাগ্রস্ত করে বাড়িঘর নির্মাণ এবং বর্জ্য ফেলে ড্রেন ও জলাশয় ভরাট করে ফেলায়  নাইজেরিয়ায় প্রায়ই বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে।

ফেডারেল পানি ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী জোসেফ উটসেভ বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন-সৃষ্ট চরম আবহাওয়ার কারণে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে এ বন্যা হয়েছে।

তিনি ‘অনিয়ন্ত্রিত কাঠামো’ সম্পর্কেও সতর্ক করেন এবং স্থানীয় সরকারকে তাদের খালগুলোতে নিষ্কাশন ব্যবস্থা বজায় রাখার আহ্বান জানান।

মোকওয়ায় দুর্যোগের কয়েকদিন আগে নাইজেরিয়ার আবহাওয়া সংস্থা বুধবার থেকে শুক্রবারের মধ্যে নাইজার রাজ্যসহ ৩৬টি রাজ্যের ১৫টিতে সম্ভাব্য আকস্মিক বন্যার বিষয়ে সতর্ক করে।

এই সপ্তাহের শুরুতে যখন এএফপির সাংবাদিকরা শহরটি পরিদর্শন করেন, তখন বাতাসে প্রচুর দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। বাসিন্দারা বলেন, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়া পচা মৃতদেহ থেকে এ গন্ধ আসছে।

সরকার জানিয়েছে, তারা ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সাহায্য পাঠিয়েছেন। কিন্তু স্থানীয়রা জানিয়েছে, তারা কিছুই পায়নি।

জাতীয় জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থা মঙ্গলবার আরেকটি বিবৃতিতে বলেছে, তারা ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের তাৎক্ষণিক সহায়তা প্রদানের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করছে।