বাসস
  ০৩ জুন ২০২৫, ১২:২৫

এআই চাহিদা বাড়ায় রেকর্ড মুনাফার পূর্বাভাস দিয়েছে টিএসএমসি

ঢাকা, ৩ জুন, (২০২৫) : তাইওয়ানের চিপ নির্মাতা জায়ান্ট টিএসএমসি মঙ্গলবার জানিয়েছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির বিপুল চাহিদা মেটাতে সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন বৃদ্ধি করায় কোম্পানিটি চলতি বছরে রেকর্ড আয় প্রত্যাশা করছে। হসিনচু, তাইওয়ান থেকে এ সংবাদ জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।

বিশ্বের বৃহত্তম চুক্তিভিত্তিক চিপ নির্মাতা তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি (টিএসএমসি) অ্যাপল ও এনভিডিয়াসহ বহু প্রযুক্তি জায়ান্টের জন্য চিপ সরবরাহ করে।

টিএসএমসি চেয়ারম্যান ও সিইও সিসি ওয়ে বলেন,  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক কিছুটা প্রভাব ফেললেও তাদের এআই খাত খুবই শক্তিশালী থাকবে।

তিনি কোম্পানির বার্ষিক শেয়ারহোল্ডার সভায় বলেন, এই বছর আমাদের রাজস্ব ও মুনাফা ইতিহাসের সর্বোচ্চ রেকর্ড গড়বে।

এআই’র উচ্চ চাহিদার প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, আমরা আমাদের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করছি যাতে আমাদের গ্রাহকদের সন্তুষ্ট করতে পারি। তবে মধ্যপ্রাচ্যে কারখানা নির্মাণের পরিকল্পনা সংক্রান্ত খবরকে নাকচ করে দেন তিনি।

চীন থেকে সম্ভাব্য হুমকির কারণে, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশ দীর্ঘদিন ধরেই চাইছে টিএসএমসি যেন তাইওয়ান থেকে তার উৎপাদনের একটি অংশ অন্যত্র সরিয়ে নেয়।

বেইজিং তাইওয়ানকে চীনের অংশ বলে দাবি করে এবং বলপ্রয়োগের মাধ্যমে একীভূত করার হুমকি দিচ্ছে।

এই চাপের পরিপ্রেক্ষিতে, টিএসএমসি গত কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং জাপানে নতুন কারখানার কাজ শুরু করেছে।

ব্লুমবার্গ নিউজ গত সপ্তাহে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের বরাতে জানায় যে, টিএসএমসি সংযুক্ত আরব আমিরাতে একটি উন্নত প্রযুক্তির কারখানা নির্মাণের কথা বিবেচনা করছে।

সিসি ওয়ে বলেন, আমি মনে করি, চারদিকে অনেক গুজব ছড়াচ্ছে।

টিএসএমসি গত মাসে জানায়, এপ্রিল মাসে তাদের বিক্রি হয়েছে ৩৪৯.৬ বিলিয়ন তাইওয়ান ডলার (প্রায় ১১.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার)। যা আগের বছরের তুলনায় ৪৮.১ শতাংশ এবং মার্চ মাসের তুলনায় ২২.২ শতাংশ বেশি।

এই ঊর্ধ্বগতি এসেছে এমন এক সময়ে, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈশ্বিক শুল্ক নীতির কারণে অনেক কোম্পানি ভবিষ্যতে শুল্ক বৃদ্ধির আশঙ্কায় অগ্রিম মজুত শুরু করেছে।

ওয়ে শেয়ারহোল্ডারদের বলেন, যদি শুল্কের কারণে দাম বেড়ে যায় এবং চাহিদা কমে যায়, তাহলে আমাদের ব্যবসার ওপর প্রভাব পড়তে পারে, তবে তবুও আমাদের ব্যবসা ভালোই থাকবে।

তিনি আরও বলেন, আমি কিছুই ভয় পাই না, আমি কেবল ভয় পাই যদি বিশ্ব অর্থনীতি ধসে পড়ে।

টিএসএমসি ট্রাম্প প্রশাসনের নজরে রয়েছে, যিনি তাইওয়ানকে যুক্তরাষ্ট্রের চিপ শিল্প চুরি করার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন।

টিএসএমসির যুক্তরাষ্ট্রে অতিরিক্ত ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ পরিকল্পনায় অনেকেই আশা করেছিলেন, এতে তাইওয়ান যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক থেকে কিছুটা রেহাই পাবে।

তবে ট্রাম্প এরপরও তাইওয়ান থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ৩২ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন, যদিও সেমিকন্ডাক্টর পণ্যসমূহ এই শুল্ক থেকে অব্যাহতি পায়।

ওয়াশিংটন এই সেক্টরের ওপর ‘জাতীয় নিরাপত্তা; তদন্ত শুরু করেছে। যা ভবিষ্যতে চিপ ও চিপ তৈরির যন্ত্রাংশে শুল্ক আরোপের পথ খুলে দিতে পারে।