বাসস
  ০৩ জুন ২০২৫, ১২:১৫

নাইজেরিয়ার বিমান হামলায় কমপক্ষে ২০ জন বেসামরিক লোক নিহত : বাসিন্দের দেয়া তথ্য

কানো, নাইজেরিয়া, ৩ জুন, ২০২৫ (বাসস) : নাইজেরিয়ার যুদ্ধবিধ্বস্ত উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সামরিক বিমান হামলায় কমপক্ষে ২০ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে, সোমবার তিনজন বাসিন্দা এএফপিকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

বাসিন্দারা জানিয়েছেন, জামফারা রাজ্যে স্থানীয় একদল নিরাপত্তারক্ষীর উপর হামলা চালানো হয়েছে।

নাইজেরিয়ার সেনাবাহিনী এই হামলার বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেয়নি তবে স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বিমান বাহিনী জানিয়েছে যে ‘নির্ভুল লড়াইয়ে’ কমপক্ষে ২০ জন ‘সশস্ত্র সন্ত্রাসী" নিহত হয়েছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নাইজেরিয়া বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী, জিহাদি থেকে শুরু করে ‘দস্যু’ নামধারি অপরাধী দলগুলোর বিরুদ্ধে বিমান অভিযানে কয়েক শত বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা এএফপিকে জানিয়েছেন, ডাকাতরা মারু জেলার মানি এবং ওয়াবি গ্রামে আক্রমণ করে, গরু চুরি করে এবং কয়েক ডজন মানুষকে অপহরণ করে।

স্থানীয়দের মতে, নিকটবর্তী মারায়া গ্রামের বাসিন্দারা ও পার্শ্ববর্তী সম্প্রদায়ের বাসিন্দারা জড়ো হয়ে অপহৃত ও গবাদি পশুগুলো মুক্ত করার জন্য ধাওয়া শুরু করে। 

কিন্তু সূত্র জানায়, এলাকার লোকজন নিরাপত্তা কর্মীদের সতর্ক করার পর, স্বেচ্ছাসেবকদের ডাকাত ভেবে মারায়া ও ওয়াবির মধ্যে বোমা হামলা চালালে, সম্প্রদায়কে সহায়তা করার জন্য একটি সামরিক বিমান মোতায়েন করা হয়।

এই এলাকার বাসিন্দা বুহারি ডাঙ্গুলবি বলেন, ‘শনিবার আমরা দুটি ট্র্যাজেডির মুখোমুখি হয়েছি। আমাদের কয়েক ডজন মানুষ ও বেশ কয়েকটি গরু ডাকাতদের হাতে ধরা পড়ে এবং যারা ডাকাতদের উদ্ধারের জন্য তাদের পিছনে পিছনে এসেছিল তাদের উপর একটি যুদ্ধবিমান বোমা হামলা চালায়। এতে তাদের ২০ জন নিহত হয়।’ 

নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে দস্যুরা বছরের পর বছর ধরে তাণ্ডব চালিয়ে আসছে। দেশের উত্তর-পূর্বে তুলনামূলকভাবে শাসনহীন গ্রামাঞ্চলের বিস্তৃত অংশে তারা তাদের জিহাদি প্রতিপক্ষের বিপরীতে তৎপর। তারা মূলত অর্থনৈতিক উদ্দেশে এ ধরনের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। 

শনিবারের ঘটনাটি জামফারা রাজ্যে তৃতীয়বারের মতো ঘটে। দস্যু ও জিহাদি উভয়ের বিরুদ্ধে সামরিক বোমা হামলা অভিযান ক্রসফায়ারে আটকে পড়া বেসামরিক নাগরিকদের জন্য মারাত্মক বলে প্রমাণিত হয়েছে।

জানুয়ারিতে, জামফারা রাজ্যের জুরমি জেলায় স্থানীয় গোয়েন্দাদের সন্ত্রাসী দল ভেবে একটি জেট বিমান হামলায় কমপক্ষে ১৬ জন নিহত হয়।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে, জামফারার ডানসাদাউ জেলার মুতুনজি গ্রামে পলায়নপর দস্যুদের তাড়া করে আসা একটি জেট বিমান বোমা শতাধিক বেসামরিক লোক নিহত হয়।

গত বছরের ডিসেম্বরে, সোকোটো রাজ্যে লাকুরাওয়া জিহাদিদের অবস্থানে বোমা হামলা চালাতে গিয়ে একটি জেট দুটি গ্রামে আঘাত করলে ১০ জন নিহত ও আরও ছয়জন আহত হয়।

২০২৩ সালের ডিসেম্বরে, উত্তর-পশ্চিম কাদুনা রাজ্যের টুডুন বিরি সম্প্রদায়ের মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের একটি ধর্মীয় সমাবেশকে ডাকাত ভেবে নাইজেরিয়ার সামরিক বিমান হামলায় কমপক্ষে ৮৫ জন নিহত হয়, যাদের বেশিরভাগই ছিল নারী ও শিশু।

২০১৭ সালের জানুয়ারিতে, ক্যামেরুন সীমান্তের কাছে র‌্যান শহরে জিহাদি সহিংসতার কারণে বাস্তুচ্যুত ৪০ হাজার লোকের একটি শিবিরে এক যুদ্ধবিমান হামলায় কমপক্ষে ১১২ জন নিহত হয়।