শিরোনাম
ঢাকা, ২ জুন, ২০২৫ (বাসস) : রাশিয়ার বাড়তে থাকা আগ্রাসন এবং আধুনিক যুদ্ধের পরিবর্তিত প্রকৃতির প্রেক্ষাপটে সোমবার নিজেদের প্রতিরক্ষা কৌশল ও সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে বড় ধরনের পর্যালোচনা প্রকাশ করতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য।
লন্ডন থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার রোববার সতর্ক করে বলেছেন, যুক্তরাজ্য এখন ‘শত্রুতাপূর্ণ রাষ্ট্রগুলোর সরাসরি হুমকির’ মুখে রয়েছে। এ প্রেক্ষিতে তাঁর সরকার একগুচ্ছ নতুন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ঘোষণা করেছে।
জনপ্রিয় সংবাদপত্র দ্য সানে প্রকাশিত বিবৃতিতে স্টারমার বলেন, ‘আমরা যুক্তরাজ্যের যুদ্ধ প্রস্তুতির সক্ষমতাকে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর মূল উদ্দেশ্য হিসেবে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করব।’
যুক্তরাজ্য ইতোমধ্যেই রাশিয়ার হুমকির মুখে নতুন করে নিজেদের অস্ত্রসজ্জা বাড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে এবং আশঙ্কা করছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউরোপকে আগের মতো সুরক্ষা দেবেন না।
সোমবার লেবার পার্টির নেতৃত্বাধীন সরকার তাদের স্ট্র্যাটেজিক ডিফেন্স রিভিউ বা কৌশলগত প্রতিরক্ষা পর্যালোচনা প্রকাশ করবে। সেখানে যুক্তরাজ্যের সামনে থাকা হুমকিগুলো মূল্যায়ন করে সুপারিশ দেওয়া হবে।
দ্য গার্ডিয়ান-এর প্রতিদেন অনুযায়ী, এই পর্যালোচনায় সতর্ক করে বলা হচ্ছে, ড্রোন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আধুনিক যুদ্ধের চেহারা বদলে দিচ্ছে, এমন পরিস্থিতিতে ‘নতুন হুমকির যুগে’ প্রবেশ করছে যুক্তরাজ্য।
স্টারমার বলেন, এটি ‘আগামি কয়েক দশক ধরে শক্তি ও নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা হিসেবে কাজ করবে’।
তার সরকার গত ফেব্রুয়ারিতে ঘোষণা দেয় যে, ২০২৭ সালের মধ্যে প্রতিরক্ষা বাজেট জিডিপির ২.৫ শতাংশে উন্নীত করা হবে, যা স্নায়ুযুদ্ধ পরবর্তী সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় ধারাবাহিক প্রতিরক্ষা ব্যয় বৃদ্ধি। এছাড়াও বাজেট সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আগামী সংসদীয় মেয়াদে (২০২৯ সাল নাগাদ) তা আরো বাড়িয়ে ৩ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানানো হয়।
লেবার সরকার জানিয়েছে, এই অতিরিক্ত প্রতিরক্ষা ব্যয় মেটাতে যুক্তরাজ্যের বিদেশ সহায়তা খাত থেকে বরাদ্দ কমানো হবে।
এর আগে ২০২১ সালে তৎকালীন কনজারভেটিভ সরকারের সময় শেষবারের মতো প্রতিরক্ষা পর্যালোচনা করা হয়েছিল, যা ২০২৩ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর সংশোধন করা হয়।
ন্যাটোর সাবেক মহাসচিব জর্জ রবার্টসনের নেতৃত্বে পরিচালিত পর্যালোচনার সুপারিশের ভিত্তিতে স্টারমার অস্ত্র মজুদ ও উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানোর পদক্ষেপও ঘোষণা করেন, যা প্রয়োজনে বাড়ানো যেতে পারে।
সুপারিশের মধ্যে রয়েছে, অন্তত ছয়টি গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক উৎপাদনকারী কারখানা নির্মাণে ১৫০ কোটি পাউন্ড (প্রায় ২শ কোটি মার্কিন ডলার) বরাদ্দ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি দেশীয়ভাবে নির্মিত ৭ হাজারটি দূরপাল্লার অস্ত্র সংগ্রহ এবং চলতি সংসদীয় মেয়াদে গোলাবারুদ ক্রয়ে ৬ কোটি পাউন্ড ব্যয় করা হবে।
এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে সামরিক চুক্তির অংশ হিসেবে ১২টি নতুন আক্রমণাত্মক সাবমেরিন নির্মাণ করা হবে এবং পারমাণবিক ওয়ারহেড কর্মসূচিতে ১৫শ কোটি পাউন্ড বিনিয়োগ করা হবে।
পাশাপাশি সামরিক ক্ষেত্রে সাইবার সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গত সপ্তাহে ১শ কোটি পাউন্ড ব্যয়ে একটি ‘সাইবার কমান্ড’ গঠনের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।