বাসস
  ০১ জুন ২০২৫, ১৩:৫৪

একটি টেক্সটাইল কারখানার শ্রমিকদের কাছে ইকুয়েডর সরকারের ক্ষমাপ্রার্থনা

ঢাকা, ১ জুন, ২০২৫ (বাসস) : ইকুয়েডরের সরকার শনিবার দেশটির জাপানি টেক্সটাইল কারখানা ফুরুকুয়ায় নিয়োজিত প্রায় ৩০০ জন শ্রমিকের কাছে ক্ষমা চেয়েছে। ওই শ্রমিকদের জীবনযাপন ও পরিপার্শিক পরিস্থিতিকে আধুনিক দাসত্বের সাথে তুলনা করেছে আদালত।

কুইটো থেকে এএফপি জানায়, ওই শ্রমিকরা টেক্সটাইল ও অটো শিল্পে ব্যবহার্য্য তন্তু উৎপাদনকারি একটি উদ্ভিদ আবাকা চাষের একটি বাগানে কাজ করতো।

২০২১ সালের হিসাব অনুযায়ী, প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলের তিনটি প্রদেশে ছড়িয়ে থাকা প্রায় ২৩ হাজার হেক্টর বিস্তৃত জমি জুড়ে ফুরুকাওয়ার আবাকা উদ্ভিদের চাষ হতো। যেখানকার জনসংখ্যার বেশিরভাগই কৃষ্ণাঙ্গ।

ডিসেম্বরে কুইটোতে এক সংবাদ সম্মেলনে, ফুরুকুয়ার কিছু শ্রমিক সেখানকার অস্বাস্থ্যকর ও জনাকীর্ণ শিবিরে শিশুর জন্মদান, আবার কাজের সাথে সম্পর্কিত আঘাতের পরে যথাযথ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত থাকার বিষয়ে অবগত করেন।

সেই মাসেই সাংবিধানিক আদালত ফুরুকাওয়াকে ৩৪২ জন ভুক্তভোগীর প্রত্যেককে ১ লাখ ২০ হাজার ডলার  করে মোট ৪১ মিলিয়ন ডলার প্রদানের নির্দেশ দেয়। কোম্পানিটিকে তাদের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে ফুরুকুয়া সাংবিধানিক আদালতের আদেশ অগ্রাহ্য করে।

পাঁচ বছর ধরে ফুরুকাওয়া তার আবাকা ক্ষেত্রগুলোয় আধুনিক দাসত্বের পরিস্থিতিতে বজায় রাখার উল্লেখ করে সরকারকে শ্রমিকদের কাছে ক্ষমা চাওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে।

শনিবার সরকার আদালতের নির্দেশ মেনে শ্রমিকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছে। শ্রমমন্ত্রী ইভন নুনেজ বলেন, কোম্পানি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নিয়ম লঙ্ঘন করেছে যা মূলত মানবিক মর্যাদা ক্ষুন্ন করেছে।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো নির্যাতিত শ্রমিকদের দুর্দশার অভিযোগে কর্নপাত করেনি।

কুইটোর ইন্ডিপেন্ডেন্স প্লাজায় অন্যান্য সরকারি মন্ত্রীদের উপস্থিতিতে এক অনুষ্ঠানে নুনেজের বক্তব্য প্রদানের সময় প্রাক্তন ফুরুকাওয়া শ্রমিকরা ‘ক্ষতিপূরণ, ক্ষতিপূরণ’ এবং ‘আধুনিক দাসত্ব, আর কখনও নয়’ বলে স্লোগান দেয়।

আদালতের রায়ের পর, ফুরুকাওয়া বলেছে, ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক আদেশ দেওয়া ক্ষতিপূরণ পরিশোধ করার জন্য তাদের কাছে যথেষ্ট অর্থ নেই এবং এসব নির্দেশকে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বলে অভিহিত করেছেন।

ডিসেম্বরে, একটি মানবাধিকার গোষ্ঠীর সদর দপ্তরে এক সভায়, বাগান শ্রমিকরা আবাকা চাষের সময় তাদের জীবনের ভয়াবহ গল্পগুলো বর্ণনা করেন।

৫৯ বছর বয়সী কৃষক সেগুন্দো অর্ডোনেজ সভায় বলেন, ‘আমরা ফুরুকাওয়া নামক দানবের মুখোমুখি হয়েছি।’