শিরোনাম
ঢাকা, ১ জুন, ২০২৫ (বাসস) : মহাকাশ অভিযানে বহুদিন ধরেই সংগীতের প্রতীক হয়ে থাকা জোহান স্ট্রস জুনিয়রের বিখ্যাত ওয়াল্টজ ‘দ্য ব্লু ড্যানিউব’ এবার বাস্তবেই ছড়িয়ে পড়ল মহাশূন্যে। কিংবদন্তি এই অস্ট্রিয়ান সুরকারের ২০০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ইএসএ) ওয়াল্টজটির সরাসরি পরিবেশনা মহাকাশে সম্প্রচার করেছে।
ভিয়েনা থেকে এএফপি জানায়, শনিবার ভিয়েনা সিম্ফনি অর্কেস্ট্রা অস্ট্রিয়ার রাজধানীতে একটি বিশেষ কনসার্টে এ সংগীত পরিবেশন করে। অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার হয় অনলাইনে, ভিয়েনার একটি বড় স্ক্রিনে, নিউইয়র্কের ব্রায়ান্ট পার্কে এবং স্পেনে ইএসএর সেব্রেরোস গ্রাউন্ড স্টেশনের কাছে।
ইএসএর মহাপরিচালক যোসেফ অ্যাশবাখার এএফপিকে জানান, ডিজিটালভাবে রেকর্ড করা সুরটি স্পেনের ৩৫ মিটার দীর্ঘ স্যাটেলাইট ডিস থেকে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গে রূপান্তর করে মহাকাশে পাঠানো হয়।
‘মহাকাশের সুর’
‘দ্য ব্লু ড্যানিউব’ অষ্টাদশ শতকের ভিয়েনার আভিজাত্য ও নৃত্যসংস্কৃতিকে ধারণ করে। তবে ১৯৬৮ সালে স্ট্যানলি কুব্রিকের চলচ্চিত্র ‘২০০১: আ স্পেস অডিসি’-তে ব্যবহারের পর এটি হয়ে ওঠে মহাকাশ অভিযানের সাংস্কৃতিক প্রতীক।
ভিয়েনা পর্যটন বোর্ডের পরিচালক নর্বার্ট কেটনার বলেন, 'এই ওয়াল্টজ আজ এক প্রকার অঘোষিত মহাকাশ সংগীত।' তার মতে, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে ডকিংয়ের সময়ও এটি বাজানো হয়।
ভিয়েনা সিম্ফনি অর্কেস্ট্রার পরিচালক ইয়ান নাস্ট বলেন, সংগীতটির ভেসে বেড়ানো গতি এবং হালকা ছন্দ যেন মহাশূন্যেই মানানসই।
তিনি আরও বলেন, 'সঙ্গীত এমন এক ভাষা, যা বিশ্বব্যাপী মানুষের মন ছুঁয়ে যায়—আশা ও আনন্দ ছড়িয়ে দেয়।'
মহাবিশ্বে ‘অদৃশ্য শূন্যস্থান পূরণ’
এই সাউন্ড সিগন্যাল আলোর গতিতে প্রায় ২৩ ঘণ্টা ৩ মিনিট সময় নিয়ে পৌঁছবে নাসার ভয়েজার ১ মহাকাশযানে—যেটি এখন পর্যন্ত মানুষের তৈরি সবচেয়ে দূরবর্তী বস্তু।
এরপর তা পার হবে ভয়েজার ২-এর পাশ দিয়ে এবং প্রবেশ করবে আন্তঃনাক্ষত্রিক শূন্যতায়।
এই সম্প্রচারের মাধ্যমে অস্ট্রিয়া অতীতের একটি শূন্যস্থান পূরণ করতে চায়। ভয়েজার মহাকাশযানে যে ‘গোল্ডেন রেকর্ড’ বহন করা হয়—যেখানে পৃথিবীর সংস্কৃতি ও সঙ্গীতের নমুনা দেওয়া আছে—তাতে মোৎসার্ট থাকলেও স্ট্রাসের বিখ্যাত ওয়াল্টজটি অন্তর্ভুক্ত ছিল না।
এবার সেই অনুপস্থিতি পূর্ণ হলো—ভিয়েনা থেকে ভেসে উঠল মহাবিশ্বে, স্ট্রসের চিরন্তন সুর।