শিরোনাম
ঢাকা, ৩১ মে, ২০২৫ (বাসস) : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার বলেছেন, চীন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে করা শুল্ক হ্রাস চুক্তি পুরোপুরি লঙ্ঘন করেছে, যদিও তিনি আশা করছেন ভবিষ্যতে চীনা নেতা শি চিন পিংয়ের সঙ্গে কথা হবে।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানিয়েছে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে চীনের সাথে বাণিজ্য আলোচনা ‘কিছুটা স্থগিত’ থাকার কথা জানানোর পর ট্রাম্প এই মন্তব্য করেন। বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে মে মাসে জেনেভায় আলোচনায় ৯০ দিনের জন্য শুল্ক কমিয়ে বিরতি দেয়ার চুক্তি হয়েছিল।
শুক্রবার ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল পোস্টে লেখেন, ‘চীন আমাদের সঙ্গে করা চুক্তি পুরোপুরি লঙ্ঘন করেছে। তারা যা করেছে তা অনেকের জন্য অবাক করার মতো নয়। তবে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, চীন থেকে রেয়ার আর্থ (দুষ্প্রাপ্য খনিজ) ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ রপ্তানির লাইসেন্স ইচ্ছাকৃতভাবে বিলম্বিত করা যুক্তরাষ্ট্রের হতাশার বড় কারণ। আর এই রপ্তানি পুনরায় চালু করাই ছিল চুক্তির অন্যতম মূল শর্ত।
মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার বলেন, চীন শর্ত পূরণে ইচ্ছাকৃতভাবে দেরি করছে, যা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।
তিনি বলেন, চীন দুষ্প্রাপ্য খনিজ ও বিরল মৃত্তিকা যা,গাড়ি ও চিপ তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য উপাদানের জন্য রপ্তানি লাইসেন্স অনুমোদনে চীনের ধীরগতির পদক্ষেপ মার্কিন হতাশাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
হোয়াইট হাউজের উপ-চিফ অব স্টাফ স্টিফেন মিলার বলেন, চীন তাদের দায়িত্ব পালন না করায়, যুক্তরাষ্ট্র এখন প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।
গাড়ি ও চিপ তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য উপাদানের জন্য রপ্তানি লাইসেন্স অনুমোদনে চীনের ধীরগতির পদক্ষেপ মার্কিন হতাশাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
তবে ট্রাম্প পরে সাংবাদিকদের জানান, তিনি প্রেসিডেন্ট শি চিন পিংয়ের সঙ্গে শিগগিরই কথা বলবেন এবং আশা করেন যে বিষয়টি সমাধান হবে। এই খবরে মার্কিন শেয়ারবাজারে ওঠানামা দেখা যায়। কারণ বিনিয়োগকারীরা আশঙ্কা করছেন ট্রাম্প হয়তো আবার চীনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে ফিরে যাবেন।
মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার আরও জানান, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে এবং তিনি ওইসিডি বৈঠকে যোগ দিতে ইউরোপ যাচ্ছেন।
কিওডো নিউজ জানিয়েছে, জাপানের সঙ্গে আলোচনা ভালোভাবে এগোচ্ছে। তবে ট্রাম্পের কিছু শুল্ক আদেশ আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
একটি মার্কিন আদালত রায় দিয়েছে, প্রেসিডেন্ট জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে শুল্ক আরোপ করে সীমা লঙ্ঘন করেছেন। ফলে, কিছু বড় শুল্ক এখন বাতিল থাকলেও আপিল চলায় তা কার্যকর হয়নি। তবে এখনো ইস্পাত ও গাড়ি আমদানির ওপর শুল্ক বহাল রয়েছে।
মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার বলেন, আইনি প্রক্রিয়া শেষ হলে অন্যান্য দেশ ভালোভাবে বুঝতে পারবে কীভাবে চুক্তি করা যেতে পারে।
ট্রাম্প দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই বেশিরভাগ বাণিজ্য অংশীদারের ওপর মোটামুটি উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করেছেন। চীনের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ১৪৫ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশ -এ শুল্ক কমিয়েছে এবং চীন ১২৫ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ -এ নামিয়েছে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের অতিরিক্ত ২০ শতাংশ শুল্ক এখনো বহাল আছে। যা চীনের বিরুদ্ধে অবৈধ মাদক পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে আরোপ করা হয়েছিল । যদিও চীন তা অস্বীকার করে আসছে। এই উচ্চ শুল্কের কারণে, নতুন চুক্তির অপেক্ষায় অনেক ব্যবসায়ী চীন ও যুক্তরাষ্ট্রে তাদের পণ্য পাঠানো বন্ধ রেখেছে।