শিরোনাম
ঢাকা, ৩১ মে, ২০২৫ (বাসস) : অস্ট্রিয়ান সংগীতজ্ঞ জোহান স্ট্রস জুনিয়রের অমর সৃষ্টি ‘দ্য ব্লু ড্যানিউব’ শনিবার সত্যিকার অর্থেই তারার রাজ্যে পাড়ি জমাচ্ছে। স্ট্রসের ২০০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা (ইএসএ) এদিন এই বিখ্যাত ওয়াল্টজটির সরাসরি পরিবেশনা মহাকাশে সম্প্রচার করবে।
ভিয়েনা থেকে ১৯৩০ জিএমটি (বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ১টা ৩০ মিনিট) থেকে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় ভিয়েনা সিম্ফনি অর্কেস্ট্রার পরিবেশনা শুরু হবে।
ইএসএর মহাপরিচালক জোসেফ অ্যাশবাখার জানিয়েছেন, এই পরিবেশনা সরাসরি সম্প্রচার করা হবে অনলাইনে, ভিয়েনা, নিউইয়র্কের ব্রায়ান্ট পার্ক এবং স্পেনে ইএসএর সেব্রেরোস গ্রাউন্ড স্টেশনের নিকটস্থ এলাকায় বড় পর্দায় প্রদর্শন করা হবে।
অ্যাশবাখার বলেন, ‘ডিজিটাল রূপে রূপান্তরিত এই সুর ৩৫ মিটার ব্যাসের একটি বৃহৎ স্যাটেলাইট ডিশের মাধ্যমে মহাকাশে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গে রূপান্তর করা হবে।’
‘মহাকাশের প্রতীকস্বর’
স্ট্যানলি কুব্রিকের ১৯৬৮ সালের ক্লাসিক সায়েন্স ফিকশন সিনেমা ‘২০০১: এ স্পেস অডিসি’-তে ব্যবহারের পর‘দ্য ব্লু ড্যানিউব’ প্রথমবার বিশ্বজুড়ে মহাকাশ ভ্রমণের এক প্রতীক হয়ে ওঠে। ভিয়েনা ট্যুরিস্ট বোর্ডের পরিচালক নরবার্ট কেটনার একে আখ্যা দিয়েছেন ‘মহাকাশের অঘোষিত সংগীত’ হিসেবে।
তার ভাষায়, ‘এই সুর আইএসএসের বিভিন্ন ডকিং ম্যানুভারে বহুবার বাজানো হয়েছে। এটি যেন সত্যিকারের মহাকাশ সঙ্গীত।’
ভিয়েনা সিম্ফনি অর্কেস্ট্রার পরিচালক ইয়ান ন্যাস্ট জানান, পরিবেশনার সময় তারা ওয়াল্টজটির ভাসমানতা আরও বেশি করে তুলে ধরতে চান, যেন এটি সত্যিই শূন্যে ভাসছে। তার মতে, ‘সংগীত এমন এক ভাষা, যা বহু মানুষের হৃদয় স্পর্শ করে এবং সর্বজনীনভাবে আশা ও আনন্দের বার্তা পৌঁছে দিতে পারে।’
‘একটি ফাঁকা জায়গা পূরণ’
এই সুরটি যখন স্পেনের স্যাটেলাইট ডিশ দিয়ে মহাকাশে ছোড়া হবে, তা আলোর গতিতে প্রায় ২৩ ঘণ্টা ৩ মিনিটে মানবজাতির তৈরি সবচেয়ে দূরবর্তী বস্তু নাসার ভয়েজার-১ মহাকাশযানে পৌঁছবে। এরপর সেটি অতিক্রম করে এগিয়ে যাবে আন্তঃনাক্ষত্রিক পথে।
এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে অস্ট্রিয়া একধরনের সংগীত-অবিচারও সংশোধন করতে চায়। কারণ, ভয়েজার-১ ও ২ মহাকাশযানে যে গোল্ডেন রেকর্ড পাঠানো হয়েছে, তাতে মোৎজার্টের ‘দ্য ম্যাজিক ফ্লুট’ থাকলেও স্ট্রসের ‘ব্লু ড্যানিউব’ অনুপস্থিত।
শনিবারের এই ‘আন্তঃনাক্ষত্রিক কনসার্ট’-এর মধ্য দিয়ে তাই অস্ট্রিয়া কেবল স্ট্রসকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে না, বরং ইতিহাসে বিশ্বসংগীত
ও মহাজাগতিক স্থায়ীত্বের সীমানায় তার সংগীতের উপস্থিতিও নিশ্চিত করছে।