বাসস
  ২৯ মে ২০২৫, ১৬:১৭

ফরাসি আদালতে সাবেক সিরীয় বিদ্রোহীর ১০ বছরের কারাদণ্ড

ঢাকা, ২৯ মে, ২০২৫ (বাসস): সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের দায়ে একটি ফরাসি আদালত বুধবার সাবেক এক সিরিয়ান ইসলামপন্থী বিদ্রোহীকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে, যা ফ্রান্সের প্রথম ইউনিভার্সাল জাস্টিস মামলার রায়। মাজদি নেমা, যিনি বিদ্রোহী গোষ্ঠী জায়েশ আল-ইসলাম-এর সাবেক মুখপাত্র ছিলেন, তাকে যুদ্ধাপরাধে সহায়তা ও ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সী কিশোরদের জোরপূর্বক নিয়োগে সহায়তার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত।

প্যাারিস থেকে এএফপি জানিয়েছে, বিদ্রোহী গোষ্ঠী জইশ আল-ইসলামের প্রাক্তন মুখপাত্র মাজদি নেমাকে যুদ্ধাপরাধে জড়িত থাকায় বিশেষ করে ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সী নাবালকদের বাধ্যতামূলকভাবে নিয়োগ এবং যুদ্ধাপরাধের প্রস্তুতিতে সহায়তা করার অভিযোগে প্যারিসের একটি আদালত দোষী সাব্যস্ত করেছে। ২০২০ সালে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর মার্সেই থেকে ফরাসি কর্তৃপক্ষ নেমাকে গ্রেপ্তার করে। তখন একটি ছাত্র বিনিময় কর্মসূচিতে দেশটিতে ভ্রমণ করেছিল তিনি।

সর্বজনীন এখতিয়ারের নীতির অধীনে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল, যা রাষ্ট্রগুলোকে গুরুতর অপরাধের জন্য অভিযুক্ত সন্দেহভাজনদের বিচার করার অনুমতি দেয়। সেগুলো যেখানেই সংঘটিত হোক না কেন। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় সংঘটিত অপরাধের বিচার ফ্রান্সে সর্বজনীন এখতিয়ারের অধীনে প্রথমবারের মত হয়।

ইসলাম আলুশ নামে বেশি পরিচিত নেমা প্যারিস আদালতকে বলেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগের পক্ষে কোনও প্রমাণ নেই।

তিনি বলেন, ২০১৩ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে দামেস্কের বিদ্রোহী অধিকৃত শহরতলিতে প্রভাব বিস্তারকারী সশস্ত্র গোষ্ঠীতে তার কেবল সীমিত ভূমিকা ছিল।

ইসলামপন্থী নেতৃত্বাধীন যোদ্ধারা ডিসেম্বরে উৎখাত করার আগে বাশার আল-আসাদের সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করা প্রধান বিরোধী দলগুলোর মধ্যে একটি ছিল জাইশ আল-ইসলাম। তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বেসামরিক নাগরিকদের সন্ত্রাসী তৎপরতায় যুক্ত করার অভিযোগও তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে।

এই মামলাটি ইউনিভার্সাল জুরিসডিকশন নীতির আওতায় পরিচালিত হয়েছে। যেখানে যে কোনো দেশে সংঘটিত গুরুতর অপরাধের বিচার, অপরাধের অবস্থান নির্বিশেষে অন্য কোনো দেশেও করা যায়। 

এটাই প্রথমবার সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ সংক্রান্ত কোনো অপরাধের বিচার ফ্রান্সে এই নীতির ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হলো।
মাজদি নেমা, যার ছদ্মনাম ছিল ‘ইসলাম আলুশ’, আদালতে বলেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই এবং তিনি গোষ্ঠীতে সীমিত ভূমিকা পালন করতেন।

জায়েশ আল-ইসলাম সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদবিরোধী এক প্রধান বিদ্রোহী গোষ্ঠী, ২০১৩ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে দামেস্কের বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত উপশহরগুলোয় তারা আধিপত্য বিস্তার করে ছিল। গোষ্ঠীটি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বেসামরিক নাগরিকদের ওপর আতঙ্ক সৃষ্টি করার অভিযোগেও অভিযুক্ত।